বিশ্ব রেকর্ডে ঠাঁই বাংলাদেশি ছাত্রী অরণীর

ভারত সরকারের আইসিসিআর স্কলার হিসেবে গুজরাতের বিখ্যাত বরোদা এমএস বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতনাট্যমের শেষ সিমেস্টারে অধ্যয়নরত অরণী ভক্ত বিশ্ববিদ্যালয়টির নৃত্য বিভাগের গড়া বিশ্ব রের্কডের অংশ হয়েছেন। একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে সম্প্রতি এ রেকর্ডের অংশীজন হয়ে দেশকে গৌরবের বরমাল্য পড়িয়েছেন এ ধ্রুপদী নৃত্যশিল্পী। বাংলাদেশসহ এতে অংশ নিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ভারতসহ মোট ৭টি দেশের নৃত্য-প্রতিনিধিরা।

জানা যায়, গত ১৩ মার্চ করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রচারণার অংশ হিসেবে বরোদা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্য বিভাগের শিক্ষক এবং বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩৩৭ জন স্ব স্ব ভেন্যু থেকে ফেসবুকে লাইভ করে ভারতীয় সময় বিকেল ৪.৩০-এ বা বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায়। নৃত্য বিভাগের ভরতনাট্যম ও কত্থক শাখার নৃত্যশিল্পীরা একই গানে, একই কোরিওগ্রাফিতে এ সময় নৃত্য পরিবেশন করে। ‘শত্রু হ্যায়েন অদৃশ্য’ শিরোনামের এ গানটির গীতিকার শরদ গুপ্ত আর গানটির সুর করেছেন ১৬ বছর বয়সী কিশোর শিবম সিং।

এটি ‘ন্যূনতম সময়ে বিভিন্ন ভেন্যু থেকে অনলাইনে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষের ধ্রুপদী নৃত্য পরিবেশনের ক্ষেত্রে কোন ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের গড়া বিশ্বরেকর্ড হিসেবে বিবেচিত হবে। ‘ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অব ইন্ডিয়া’র পক্ষে এমন গৌরবের স্বীকৃতি সাধারণত দেয় জিনিয়াস ফাউন্ডেশন।

আয়োজনের নানা দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ১৭ মে নৃত্য বিভাগের এই ‘ভারতীয় বিশ্বরেকর্ড’ গড়ার মূল প্রকল্প পরিকল্পক ও বিভাগটির শিক্ষক ড. শ্রুতি বাগেলাকে একটি অভিনন্দনপত্রের মাধ্যমে এই রেকর্ডের স্বীকৃতির কথা জানিয়েছে জিনিয়াস ফাউন্ডেশেন।

বরোদা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্য বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক ফেসবুক গ্রুপ থেকে ওইদিন মাত্র ৭ জন অংশগ্রহণকারী ফেসবুক লাইভে যাওয়ার জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যেও একজন ছিলেন বাংলাদেশের অরণী। স্বভাবতই সেই লাইভটি নিজের ব্যক্তিগত ওয়ালে শেয়ার করায় সেটির দর্শন-সংখ্যাও বেশ ভালো হয়েছে এবং এমন পরিবেশনের জন্য অরণী প্রশংসিত হয়েছেন।

করোনায় লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যে অরণী তার ধ্রুপদী নৃত্যের বিভিন্ন মুদ্রার মাধ্যমে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দিক নির্দেশনা সূচিত করে প্রশংসিত হয়েছিলেন। সেখানে তিনি সেখানে তিনি ৩ ভাগে ২৬টির স্থিরচিত্রে নৃত্যভাষায় উপস্থাপন করেছিলেন করোনা প্রতিরোধের বিভিন্ন ব্যবহারিক দিক।

রেকর্ডটি অর্জিত হওয়ার পর অনুভূতি প্রকাশ করে অরণী ভক্ত জানান, নিঃসন্দেহে এমন একটি রেকর্ডের অংশ হতে পেরে ভালো লাগছে। যদিও, এটি ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের গড়া রেকর্ড, কিন্তু, একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে আমি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে অংশ নিতে পেরে অত্যন্ত গর্বিত এজন্য যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন রেকর্ড অর্জনের কথা যখন ভবিষ্যতে উঠবে, তখন বাংলাদেশের নামও উচ্চারিত হবে।