বাবাকে না জানিয়ে ছেলের লাশ দাফন, পরে জানলেন করোনা নেগেটিভ ছিল

প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস সন্দেহে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হল তানজিম আহমেদ নামে এক কলেজ শিক্ষার্থীর। এমনকি মৃত্যুর পর বাবাকে না জানিয়ে লাশের দাফন সম্পন্ন করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। অথচ মৃত্যুর পরে দেখা যায় ওই রোগীর করোনা নেগেটিভ ছিলো।

মৃতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ১৮ বছর বয়সী অসুস্থ তানজিম আহমেদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে আসেন তার বাবা। কোভিড-১৯ এর উপসর্গ না থাকলেও চারটি হাসপাতাল ঘুরে শেষ পর্যন্ত কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

তানজিমের বাবা মো. জা‌কির আহ‌মেদ জানান, তার ছেলে কোনো চিকিৎসাই পাননি। করোনা সন্দেহ করায় মৃত্যুর পরে সন্তানের লাশ দেখার জন্য আকুতি করার পরও ল‌াশ দেখ‌তে পা‌রেননি। হাসপাতাল কতৃপক্ষ তাকে না জানিয়েই সন্তানের লাশ দাফন করে ফেলে।

তিনি আরও জানান, হাসপাতালের ক‌ন্ট্রোল রুমে তাৎক্ষ‌নিক জানিয়েছিলাম কিন্তু কোনো ডাক্তার তা‌কে চি‌কিৎসা দেয়নি। বুধবার রাত সাড়ে ৩টায় সে ব্যথায় ছটফট করতে করতে মৃত্যুর কোলো ঢলে পড়ে। তারপর আমাকেও একই হাসপাতালে করোনা সাসপেক্টেড হিসেবে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। হাসপাতাল থে‌কে বলা হয় আপনার সন্তানের লাশ হাসপাতালের হিম ঘ‌রে রাখা আছে। আপনার ছে‌লের এবং আপনার রক্ত নেয়া হ‌য়ে‌ছে। কাল‌কে দুপু‌রে রি‌র্পোট দি‌বে। য‌দি আপনার ছে‌লের ক‌রোনা না হয় তাহ‌লে আপনা‌কে ছেড়ে দেয়া হবে এবং আপনার ছে‌লের লাশ বু‌ঝি‌য়ে দেয়া হ‌বে।

এদিকে বৃহস্পতিবার দুপু‌রে রি‌র্পোটে দেখা যায়, তান‌জিম আহ‌মে‌দের করোনা নেগেটিভ। এরপর দুপুর ২টায় ছেড়ে দেয়া হয় তার বাবাকে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের ডা. সা‌দিয়ার বলেন, বাংলাদেশে এখন অনেক উপসর্গ ছাড়াও রোগী পাওয়া যাচ্ছে। তাই আমাদের এখানে এখন এমন রোগীদের ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসা না পাওয়ার যে অভিযোগ করেছেন তা আসলে একটু খবর নিয়ে দেখতে হবে। আর লাশ না দেখানোর বিষয়ে যে অভিযোগ করেছেন সেটা আসলে সত্যি নয়। উনাকে জানানো হয়েছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদফতরের গাইডলাইন অনুযায়ী সাসপেক্টেড রোগীদের ক্ষেত্রেও আলাদাভাবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে দাফন করা হয়।