ঈদ উপলক্ষে বাড়ি ভাড়া নিয়ে হয়রানি বাড়ছে শিক্ষার্থীদের

‘ঈদ চলে এসেছে তাই আমার টাকার প্রয়োজন। কোথা থেকে কীভাবে দেবে জানি না, কিন্তু কালকের মধ্যেই বাড়ি ভাড়া পরিশোধ করবে। আর যদি ভাড়া দিতে না পারো, তাহলে তোমাদের মালামাল বের করে দিচ্ছি’- সম্প্রতি এভাবেই বাড়ি ভাড়া নিয়ে হুমকির শিকার হয়েছেন গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের এক শিক্ষার্থী।

গোপালগঞ্জের নবীনবাগ এলাকায় বসবাসরত এই শিক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমার বাবা একজন অটো রিকশাচালক। করোনার সময়টায় আমাদের তিনবেলা ঠিকভাবে খাবার সংগ্রহের অবস্থা নেই, আর বাড়িভাড়া পরিশোধ তো পুরোপুরি অসম্ভব।’

এসময় তিনি আরো বলেন, ‘আমি বাড়িওয়ালাকে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করছি, কিন্তু তিনি কিছুই বুঝতে চাচ্ছেন না। এই মুহুর্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতা অত্যন্ত প্রয়োজন।’

একই অবস্থা উল্লেখ করে নবীনবাগ এলাকায় বসবাসরত শেখ হাসিনা আইসিটি ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে বাড়ির মালিকরা ভাড়ার জন্য অধিক চাপ প্রয়োগ করছেন। আমাদের বাড়িওয়ালা একসাথে দু’মাসের ভাড়া চেয়েছেন। আমাদের অনেকের আর্থিক সমস্যা থাকায় আমরা করোনার সময়টাতে বাড়িভাড়া অর্ধেক নিতে অনুরোধ করেছি, কিন্তু তিনি রাজি হননি।’

শুধুমাত্র এই দুই শিক্ষার্থী নন নবীনবাগ এলাকায় বসবাসরত অধিকাংশ শিক্ষার্থী একই ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত) ড. মোঃ শাহজাহান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ইতোমধ্যে আমরা বাড়ির মালিকদের করোনার সময়টায় বাড়িভাড়া মওকুফ করার অনুরোধ জানিয়েছি। গোবরা এলাকায় ৪০ শতাংশ ভাড়া মওকুফ করা হয়েছে।’

কিন্তু নবীনবাগ এলাকায় করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় তাদের সাথে আলোচনা করতে পারেননি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে চেষ্টা করছি বিষয়টি সমাধান করতে।

উল্লেখ্য, বশেমুরবিপ্রবির প্রায় ৮৪ শতাংশ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বসবাস করেন। সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের আর্থিক সমস্যা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত) গোপালগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিমসহ গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক এবং সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের নিকট বাড়িভাড়া মওকুফের বিষয়ে সহযোগিতা চেয়ে লিখিত অনুরোধ করেন।