বাড়িতে বসেই অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা, ডিআইইউতে থাকছে না সেশনজট

করোনাভাইরাসের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়েও সরাসরি ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের সেশনজটসহ নানাবিধ সমস্যা এড়াতে শর্ত সাপেক্ষে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) একটি গাইডলাইন দিয়েছে।

এ অবস্থায় কিছু বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করলেও দ্বিধা-দ্বন্ধে রয়েছে অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে সেশনজটে পড়তে যাচ্ছে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ)। করোনার বন্ধে বাড়িতে বসেই অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ফলে তাদের থাকছে না সেশনজট।

জানা যায়, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ডিআইইউ) অনলাইনে ক্লাস শেষে এখন অনলাইনে স্প্রিং সেমিস্টারের (জানুয়ারি-এপ্রিল) ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়েছে। শুক্রবার (১৫ মে) থেকে অনলাইনের মাধ্যমে শুরু হয় এই পরীক্ষা। অনলাইনের মাধ্যমে অ্যাসাইনমেন্ট এবং ভাইভা নিয়ে শিক্ষার্থীদের গ্রেডিং করবে বলে জানা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচা‌র্য অধ্যাপক ড. কে এম মোহসিন জানান, দেশের এই সংকটময় মুহুর্তে ইউজিসির সকল নিয়ম মেনেই আমাদের পরীক্ষা গ্রহণ করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, সুপরিল্পিতভাবে আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতারকুল কাম্পাসের ইংরেজি, সিভিল, ফার্মেসি বিভাগের অধ্যয়নরত সকল শিক্ষার্থীদের অনলাইন পরীক্ষা নিতে সফল হব।

অনলাইন পরীক্ষার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার শাহ আলম চৌধুরী জানান, দেশের এই ক্রমবর্ধমান সংকটকে বাঁধা হিসেবে না নিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীদের সেশনজটের কথা মাথায় রেখেই অনলাইন পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছি৷

এ প্রসঙ্গে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক এবং সাবেক চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন জানান, করোনা ভাইরাসের আতংক এখন সারা বিশ্বেই বিরাজ করছে। বৈশ্বিক এই সংকটের প্রভাব থেকে বাংলাদেশও মুক্ত নয়। অনলাইন পরীক্ষা নিয়ে ইউজিসির থেকে একটা ইতিবাচক নির্দেশনা এসেছে। শিক্ষার্থীরা যাতে সেশনজটে না পড়ে সেজন্যই অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে ইউজিসি। সকল শিক্ষকরা এ বিষয়ে একমত হয়েছেন এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও বেশ ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গিয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে প্রযুক্তির সফল ব্যবহার নিশ্চিত করে আমরা অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষা নিতে সফল হয়েছি।

ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক আবু বাকের সিদ্দিক জানান, আমরা জুম অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন পরীক্ষা নিচ্ছি। এক্ষেত্রে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে আমরা ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের উপর অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে একটি নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে জমা নিচ্ছি। তাছাড়া জুম অ্যাপে মৌখিক পরীক্ষাও নেওয়া হচ্ছে।

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান বলেন, করোনার শুরুর দিকে আমাদের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়েছিল, এ জন্য সেশনজটে পড়ার একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। তবে কর্তৃপক্ষ অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষার ব্যবস্থা করায় সবকিছু আগের মতই আছে। এটাকে আমরা সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত বলে মনে করি। সিভিল বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ নোমান ইসলাম বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের প্রতি সব সময় মানবিক ও দায়িত্বপরায়ণ আচরণ করেছে। তাদের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয় ।

ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী শাহ আলম জানান, অনলাইন পরীক্ষা আমাদের কল্যাণের জন্যই। বাসায় থেকে এভাবে পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারবো, সেটা শুধু ডিআইইউ আন্তরিকতার জন্য সম্ভব হয়েছে। শুধু তাই নয়, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা সকলে যেন পরীক্ষা দিতে পারি তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আর্থিক সংকটে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। যা আমার প্রাণের শিক্ষাঙ্গণকে মর্যাদার আরেক একধাপে পৌঁছে দিয়েছে ।

সিভিল বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ নোমান ইসলাম বলেন, ডিআইইউ সর্বদাই আমার প্রাণের শিক্ষাঙ্গন ছিল। কারণ সর্বদাই এ প্রতিষ্ঠান আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিষয়ে মানবিক ও দায়িত্বপরায়ণ আচরণ করেছে। তাদের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয় ।