ড্যাফোডিল-এটুআই ‘অনলাইন লার্নিং সামিট-২০২০’ সম্পন্ন

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও বাংলাদেশ সরকারের এটুআই প্রকল্পের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী (১৪-১৬ মে) ‘অনলাইন লার্নিং সামিট-২০২০’ এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১৬ মে) ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক পেজে অনুষ্ঠিত লাইভ সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এটুআইয়ের পলিসি স্পেশালিস্ট আফজাল হোসেন সারোয়ার।

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মাহবুব উল হক মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল পরিবারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূরুজ্জামান এবং অনলাইন লার্নিং সামিটের আহবায়ক ও কম্পিউটিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের প্রধান সারোয়ার হোসেন মোল্লা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিএসডিআই-এর নির্বাহী পরিচালক কে এম হাসান রিপন।

তিন দিনের এই সামিটে বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে শিক্ষার্থী বিতর্ক প্রতিয়োগিতায় অংশ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভিকারুন নিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী রাফসা আনজুম প্রশংসা ও নওরীন নাহার। রানার আপ হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজের দুই শিক্ষার্থী মো. মুনজের ইরফান ও মাহমুদুল হাসান। সেরা বিতার্কিক হয়েছে মোঃ মুনজের ইরফান।

অপরদিকে অনলাইন টিচিং বেস্ট প্র্যাকটিসেস অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন নীলফামারির রানাচান্দি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ইবুল হাসান তুষার। এ বিভাগে প্রথম রানার আপ হয়েছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক অমিত চক্রবর্তী এবং দ্বিতীয় রানার আপ হয়েছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজের শিক্ষক ফারহানা জাহান লতা।

বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তুলতে হলে শিক্ষাকে যুগপোযোগী করা ছাড়া উপায় নেই। এক্ষেত্রে আমাদেরকে অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রবেশ করতেই হবে। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি একটি সময়পযোগী সামিটের আয়োজন করেছে, এ জন্য তিনি ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ জানান। তিন দিনের এই সামিট থেকে যেসব সুরারিশ ও সমাধান উঠে এসেছে তার সারসংক্ষেপ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর অনরোধ করেন মন্ত্রী।

উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী আরও বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে শুধু ব্যবসাবান্ধব বিষয়গুলো পড়ালেই চলবে না, বিজ্ঞানের মৌলিক বিষয় এবং সামাজিক বিজ্ঞানের বিষয়গুলোও পড়াতে হবে। পাশাপাশি কারিগরি সংক্ষিপ্ত কোর্সগুলোও চালু করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনামূল্যে ল্যাপটপ কর্মসূচীর প্রশংসা করে বলেন, শিক্ষার্থীদের হাতে প্রযুক্তির সুফল তুলে দিতে ড্যাফোডিল বিনামূলে ল্যাপটপ বিতরণ করে যা খুবই প্রশংসনীয় উদ্যোগ। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়কে এভাবে এগিয়ে আসা উচিত।

উল্লেখ্য, গত ১৪ মে অনলাইন লার্নিং সামিটের উদ্বোধন করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এময় তিনি আরো দুটি শিক্ষা ব্যবস্থাপনা সফটওয়্যার http://schoolbd.ac/ I http://college.ac/ এর উদ্বোধন করেন। সফটওয়্যার দুটি উদ্ভাবন করেছে ড্যাফোডিল পরিবার এবং আগামী এক বছর দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ দুটি সফটওয়্যার বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারবে।

তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এ অনলাইন সামিটে সারা দেশ থেকে সহস্রাধিক শিক্ষক, শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ ও শিক্ষাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। এই সামিটে বিভিন্ন বিষয়ে অধিবেশন, সেমিনার, কর্মশালা, প্লেনারি নেশন, অনলাইনে পাঠদান আইডিয়া উপস্থাপন ইত্যাদি অনুষ্ঠিত হয়। এসব সেশনে দেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথিতযথা প্রধান শিক্ষক, প্রিন্সিপাল ও উপাচার্যগণ অংশ নেন। তিন দিনের এই পুরো সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়েছে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে।

আয়োজকরা জানান, চলমান করোনা পরিস্থিতি সমগ্র বিশ্বকে নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এই বাস্তবতায় টেকসই শিক্ষা-সংস্কৃতি গড়ে তুলতে অনলাইন নির্ভরতার বিকল্প নেই। এই সম্মেলনের মাধ্যমে নিঃসন্দেহে শিক্ষাক্ষেত্রের চ্যালেঞ্জ বিশ্লেষণ ও সমাধানগুলো খুঁজে পাওয়া যাবে। এছাড়া শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি অনলাইন সেতুবন্ধ গড়ে উঠবে বলেও তারা আশা প্রকাশ করেন।