ফেরত যাচ্ছে এমপিওর ৪১৪ কোটি টাকা

শিক্ষা মন্ত্রণালয়

যোগ্য প্রতিষ্ঠান না পাওয়ায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের জন্য বরাদ্দকৃত ৮৬৫ কোটি টাকার মধ্যে ৪১৪ কোটি টাকা ফেরত যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। অন্যদিকে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ৪৩০ কোটি টাকার প্রয়োজন হলেও এই বিভাগে এমপিওভুক্তির জন্য বরাদ্দ ছিল ২৮২ কোটি টাকা। বাকি ১৪৯ কোটি টাকা চলতি বছরের সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ সাপেক্ষে সমন্বয় করা হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের প্রস্তাবিত বাজেট ৩৩ হাজার ১১৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা রাখা হয়েছে। এর মধ্যে উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৯ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা। যেখানে আগামী বছরের নতুন প্রতিষ্ঠান এমপিও খাতের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়নি। গত বছর এটি ছিল ২৯ হাজার ৬৫১ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার কত তা পাওয়া যায়নি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি বছর প্রতিষ্ঠান এমপিও দেওয়ার কথা বলা হলেও আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এ খাতের কোনো বরাদ্দ রাখা হচ্ছে না। এতে চরম হতাশা প্রকাশ করেছেন এমপিওবঞ্চিত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। শুধু তাই নয়, এমপিও নীতিমালায় অসংগতি দূর করতে দুটি কমিটি গঠন করা হলেও সেই নীতিমালা এখনো আলোর মুখ দেখেনি। এতে নতুন করে আবেদন নিতে পারছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে স্কুল ও কলেজ এমপিওভুক্তির জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে বরাদ্দ ছিল ৮৬৫ কোটি টাকা। কিন্তু এমপিও পাওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে স্কুল ও কলেজের সংখ্যা এক হাজার ৬৫১। তাদের পেছনে বছরে ব্যয় হবে ৪৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। যোগ্য প্রতিষ্ঠান না পাওয়ায় ৪১৪ কোটি টাকা ব্যবহার করতে পারল না শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগে ১ হাজার ৭৯টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের পেছনে বছরে ব্যয় হবে ৪৩০ কোটি টাকা। আর এই বিভাগে এমপিওভুক্তির জন্য বরাদ্দ ছিল ২৮২ কোটি টাকা। বাকি ১৪৯ কোটি টাকা চলতি বছরের সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ সাপেক্ষে সমন্বয় করা হবে বলে জানা গেছে। যদিও একশর বেশি প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত এমপিও থেকে ছিটকে গেছে। তবে তারা আপিলের সুযোগ পাবে।

তবে চলতি অর্থবছরের এমপিও বরাদ্দ ফেরত যাচ্ছে- এমন তথ্য জানা নেই বলে জানান মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) ও এমপিওভুক্ত নীতিমালা কমিটির প্রধান মোমিনুল রশিদ আমিন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রম্নতি অনুযায়ী প্রতিবছর নতুন এমপিও হবে এমনটাই আমরা জানি। নীতিমালা সংশোধনীর ব্যাপারে কমিটির প্রধান এই কর্মকর্তা বলেন, আমাদের সবকিছু প্রস্তুত। করোনার কারণে চূড়ান্ত করতে পারছি না।

সর্বশেষ এসব প্রতিষ্ঠান যদি যোগ্য না হয় তবে সংশোধিত বাজেটে সমন্বয়ের টাকা আরও কমতে পারে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগকে একত্র করে এমপিও বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা। আর যে পরিমাণযোগ্য প্রতিষ্ঠান পাওয়া গেছে তাদের পেছনে বছরে ব্যয় হবে ৮৮১ কোটি টাকা। আর ২৬৬ কোটি টাকা অব্যয়িত থাকবে।

এ ব্যাপারে নন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার বলেন, এটা খুবই হতাশাজনক খবর। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গাফিলতির কারণে এমনটা হয়েছে। তিনি বলেন, সারাদেশে এমপিওবঞ্চিত হাজার হাজার শিক্ষক বাজেটের দিকে তাকিয়ে আছেন। বাজেটের এমপিও খাতে বরাদ্দ রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।