ল্যাব নেই, তবুও করোনা টেস্টিং কিট পেল সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স!

দেশের অনেক বিভাগীয় পর্যায়েও করোনাভাইরাস পরীক্ষার ল্যাব তৈরি হয়নি একনো। সে অনুযায়ী নাটোর জেলায় আক্রান্ত বা সম্ভাব্য রোগীর চিকিৎসায় আইসোলেশন ইউনিট খোলা হয়েছে। সেখানে শুধু আক্রান্ত রোগীদের রাখার ব্যবস্থা আছে, কিন্তু করোনা পরীক্ষা করার ব্যবস্থা নেই।

এমন বাস্তবতার মধ্যেই করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য ২০০ টেস্টিং কিট পেয়েছে নাটোরের সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। অথচ করোনা পরীক্ষার জন্য সেখানে কোন ল্যাবই নেই। এ নিয়ে নানা মহল থেকে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হেয়েছে।

জানা গেছে, করোনা পরীক্ষার জন্য ওই আসনের সংসদ সদস্য এবং তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সেখানে ২০০ টেস্টিং কিট পাঠিয়েছেন। রোববার দুপুরে কিটসের পাশাপাশি চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পাঠানো হয়েছে প্রয়োজনীয় পিপিই, হ্যান্ড গ্লাভস, মাস্ক, প্রোটেক্টিভ চশমা, জীবানুনাশক হ্যান্ড স্যানিটাইজার অন্যা মেডিকেল ইকুইপমেন্ট পাঠানো হয়।

ল্যাবসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না থাকার পরও উপজেলা পর্যায়ে এই কিট কী কাজে লাগবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সিংড়া পৌর মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস কিটসহ মেডিকেল ইকুইপমেন্ট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করেন। এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওহিদুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন।

এসময় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক টেলিকনফারেন্সে বলেন, ‘চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করছেন। যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় তারা প্রস্তুত আছেন৷ সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় সিংড়াবাসীসহ দেশের মানুষকে এই মহামারী থেকে নিরাপদ রাখবো ইনশাআল্লাহ।’

ল্যাব না থাকার বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজি ল্যাবটি অত্যাধুনিক। চারজন টেকনোলজিস্ট কাজ করছেন। এই ল্যাব থেকে ডেঙ্গুরও সফল পরীক্ষা হয়েছে। আমাদের বিশ্বাস, করোনা পরীক্ষাও আমরা সফলভাবে সম্পন্ন হবে।’

তিনি বলেন, ‘কিট এখনো খুলে দেখা হয়নি। পরীক্ষা বা ব্যবহার উপযোগী কিনা তা দেখে এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ সংক্রান্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।এছাড়া আইইসিডিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরামর্শ নেওয়া হবে।’

এ ব্যাপারে সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার জানান, ‘করোনা টেস্টিং কিট পাঠানোর বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে সিংড়ায় পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে বলে তার জানা নেই।’

সিভিল সার্জন কাজী মিজানুর রহমান বলেন, ‘শুনেছি সিংড়ায় ২০০ টেস্টিং কিট হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে তা কাজে আসবে বলে মনে হয় না। তবে কিট বক্সগুলো খুলে দেখে জানাবে বলেছে। নাটোরে করোনা পরীক্ষার ল্যাব নেই। এই টেস্টের জন্য পিসিআরের প্রয়োজন, যা খুবই ব্যয়বহুল।দেশের খুব কম হাসপাতালেই তা রয়েছে। প্রতিমন্ত্রী হয়তবা সিংড়াবাসীর নিরাপত্তার কথা ভেবে কিটগুলোর ব্যবস্থা করতে পারেন।’