নেত্রীর প্রতি ভালোবাসা দেখালেন রিজভী, ৭৮৭ দিন পর বাসায়

বিএনপি কার্যালয় ছাড়েন রুহুল কবির রিজভী

কথা রাখলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ২০১৮ সালের ৩৯ জানুয়ারি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিলেন- খালেদা জিয়া মুক্তি না পেলে বাসায় ফিরবেন না। অবশেষে দুই বছর তিন মাসের মাথায় এসে নয়াপল্টনে বিএনপির দলীয় কার্যালয় ছাড়লেন তিনি। এখন তিনি আদাবরের নিজ বাসায়।

২০১৮ সালের শুরু দিকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ধরপাকড় শুরু হয়। সে সময় বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় অনেক নেতাই গ্রেপ্তার হন। ওই বছর থেকেই রিজভী দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান করতে থাকেন।

কার্যালয় ছাড়ার আগে রিজভী বলেন, আমি ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি থেকে কার্যালয়ে অবস্থান করছি। বিভিন্ন পরিস্থিতি, রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত হওয়ার একটা শঙ্কা দেখা দিচ্ছিল। ওই মুহূর্তে আমি অবস্থান নিয়েছিলাম। এরপর ম্যাডামকে জেলে নেওয়া হলো। এরপর পার্টির অফিসের নিচ থেকে নেতা-কর্মীদেরও ধরে নিয়ে যেত। এভাবে চলছিল। আমি ব্রত নিয়েই ছিলাম যে নেতা-কর্মীরা অফিসে এসে কাউকে যে পাবে না, এ কথা যেন না বলে। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখার জন্যই থেকেছি। ম্যাডাম গতকাল বেরিয়েছেন। এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে বাসায় যাব।’

দিনটা ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। এদিন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় রায়ের দিন ধার্য করেছিলেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫। সেদিন আদালত খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের সাজা হয়। ওইদিনই পুরনো ঢাকার সাবেক পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়।

রায়ের ঠিক আগের দিন গুলশানে নিজ কার্যালয়ে সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন খালেদা জিয়া। তখনই সবার মধ্যে আশঙ্কা হয় সাজা হলে পরে নেতাকর্মীরা আরো চাপের মধ্যে পড়বেন। সেই আশঙ্কা কার্যালয়ে অবস্থান নেয়া রিজভী নিজে থেকেই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন যে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত দলীয় কার্যালয়েই অবস্থান নেবেন তিনি।

একপর্যায়ে দলীয় কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় ছোট একটি রুমে রাত্রিযাপন শুরু করেন তিনি। সেখানে নিয়মিত দলীয় নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে কুশল বিনিময় ও প্রয়োজনীয় কাজের জন্য যাতায়াত করতেন। একসময় তা অনেকটা ‘সেকেন্ড হোম’ হিসেবে রূপ নেয়। দেখতে দেখতে ৭৮৭ দিন কার্যালয়ে পার করেন রিজভী। অবশেষে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির পর বাসায় ফেরেন তিনি