ডাক্তার-নার্সদের মনোবল বাড়াতে হাসপাতাল ঘুরলেন মমতা

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকারি চিকিৎসক-সহ স্বাস্থ্য প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মনোবল বাড়াতে সরকারি হাসপাতালে ঘুরেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। মঙ্গলবার শহরের প্রায় সব ক’টি মেডিক্যাল কলেজ, রাজারহাট কোয়রান্টিন কেন্দ্র এবং আইডি হাসপাতাল ঘুরে দেখেন তিনি।

নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন শেষে প্রথমে আর জি কর হাসপাতালে যান মমতা। ইতিমধ্যেই সেখানে করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। আগামী দিনে রাত্রি-আবাসে শয্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। পরিকাঠামোগত কী সমস্যা রয়েছে, তা নিয়ে উপাধ্যক্ষ মানস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেন মমতা।

তিনি জানান, লকডাউনের জেরে হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের যাতায়াতে অসুবিধার কথা মাথায় রেখে হোটেলে থাকা এবং গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর পর মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারের দু’টি বাক্স কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, এর সঙ্গে স্বাস্থ্য দফতরের সম্পর্ক নেই। এটা আলাদাভাবে দেওয়া হল।

মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পরবর্তী গন্তব্য ছিল কলকাতা মেডিকেল কলেজ। সেখানে ছিলেন স্বাস্থ্যশিক্ষা কর্মকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য। এই হাসপাতালকে করোনা হাসপাতালে পরিণত করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সে বিষয়ে দেবাশিসবাবুর পাশাপাশি অধ্যক্ষা মঞ্জুশ্রী রায়ের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী।

এরপর এনআরএসে পৌঁছে অধ্যক্ষ শৈবাল মুখোপাধ্যায় এবং উপাধ্যক্ষ সৌরভ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেন। করোনায় রাজ্যের প্রথম মৃতের সহকর্মী এনআরএসের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তাঁর স্বাস্থ্য সম্পর্কে খোঁজ নেন মমতা।

এনআরএস থেকে এসএসকেএম হয়ে মুখ্যমন্ত্রী রাজারহাট কোয়রান্টিন কেন্দ্রে গিয়ে স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সুবিধা-অসুবিধার কথা শোনেন। এরপর রাজ্যে করোনা চিকিৎসার কেন্দ্র বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে গিয়ে করোনা চিকিৎসার হালহকিকত জানেন।

তারপরে যান এম আর বাঙুরে। সুপার শিশির নস্করের কথায়, ‘মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে সাহস জুগিয়ে গেলেন তার তুলনা হয় না।’ মুখ্যমন্ত্রী যখন হাসপাতাল ছেড়ে যাচ্ছেন তখন নমস্কার করলেন অধ্যক্ষা অণিমা হালদার এবং উপাধ্যক্ষ আশিস মান্না। প্রতি নমস্কারে মাথা ঝুঁকিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘খুব ভাল কাজ করছেন। নিজেদের খেয়াল রাখুন।’

সাংবাদিক সম্মেলনেও রাজ্যবাসীকে সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘হাত জোড় করে অনুরোধ করছি, দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা করুন। ব্যাঙ্কের লাইনে যাঁরা দাঁড়ান, তাঁদেরও একই কথা বলব। রাস্তায় ক্রিকেট খেলবেন না দয়া করে। একটা বাড়িতেই চার জনের হয়ে গেল। কতটা ভয়ঙ্কর, বুঝতে পারছেন না। ভিন্‌ রাজ্য থেকে যাঁরা ফিরেছেন, তাঁদের বলব, ঘরে থাকুন। ১৪ দিন পরিবারের সঙ্গেও দূরত্ব রেখে চলুন।’ আনন্দবাজার।