হাবিপ্রবির ৬ শিক্ষক-ছাত্র-কর্মচারীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা

দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) তিন শিক্ষক, এক শিক্ষার্থী ও দুই কর্মচারীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছে প্রশাসন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮তম রিজেন্ট বোর্ডের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড.মো.রমজান আলীকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

তাছাড়া অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের মার্কেটিং বিভাগের লেভেল-৪ সেমিস্টার-২ এর শিক্ষার্থী আলমগীর কবিরকে দুই সেমিস্টারের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম এবং আবাসিক হল থেকে আজীবনের জন্য বহিস্কার করা হয়েছে।

ছাড়া রিজেন্ট বোর্ডের ওই সভায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করার অপরাধে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৌরভ পাল চৌধুরীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিন এন্ড আপিল রুলস অনুসারে পরবর্তী উচ্চতর পদে পদোন্নতি বা পর্যানোন্নয়ন তিন (৩) বছর স্থগিত করা হয়।

হুবহু একই প্রশ্নপত্রে দুই (২) বৎসর সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা গ্রহণের অভিযোগে পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম হতে দুইবছর বিরত রাখা এবং স্বীয় বিভাগের অধ্যাপক মো.কুতুব উদ্দিন এর সাথে অশালীন ও অনাকাঙ্খিত আচরণের অভিযোগে কঠোরভাবে সতর্ক করে দেয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত তথ্য-প্রমাণ ছাড়া নিয়োগে অনিয়ম ও বাণিজ্য হয়েছে মর্মে অভিযোগ তুলে ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দেওয়ার অপরাধে বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের জুনিয়র ক্লার্ক (কর্মচারী) কবিতা রায়কে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। একই রুলসে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র ল্যাব টেকনিশিয়ান মো. আমিনুল ইসলামকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক রুজু করা মামলার চার্জশিট না হওয়া পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা-২০২০ চলাকালীন দায়িত্ব পালন অবস্থায় অসদুপায় অবলম্বন করার দায়ে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

এছাড়া এই রিজেন্ট বোর্ডের সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদীয় বিভিন্ন বিভাগে ১১ জন প্রভাষকের নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। পাশাপাশি অন্য অনুষদের কয়েকটি বিভাগের শিক্ষকদের পদোন্নতি দেয়া হয়।

শাস্তির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. ফজলুল হক বলেন, রিজেন্ট বোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম। এখানে সরকারের বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিগণ মেম্বার হিসেবে থাকেন। রিজেন্ট বোর্ডে কোন বিষয় উপস্থাপন হলে সে বিষয়ে মেম্বাররা সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করে তারপর সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।

তিনি বলেন, কেউ তো চায়না কারো শাস্তি হোক। কারণ শাস্তি কথাটাই তো খারাপ। কিন্তু যখন মানুষ অপরাধ করে, তখন তার শাস্তি আরোপ করা হয়। কারণ একজন মানুষের অপরাধের কারণে তাকে শাস্তি দিয়ে হাজার হাজার মানুষকে সতর্ক করে দেয়া হয়। যাতে অন্যরা বুঝতে পারে যে অপরাধ করলে তাকেও এই শাস্তি দেয়া হবে।