নিয়োগ পেয়েই বাড়ির পাশে বদলি চান শিক্ষকরা

সুনামগঞ্জ জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের এক সপ্তাহ পার না হতেই শিক্ষকদের নানা অজুহাতে বদলির আবেদনের হিড়িক পড়েছে। ইতোমধ্যে বদলি চেয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত অনেকেই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করছেন। নিয়োগ পাওয়ার পরপরই বাড়ির পাশে বদলি চেয়ে আবেদন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য শুভ ফল বয়ে আনবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর সুনামগঞ্জের ১১টি উপজেলায় প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ৬২১ জন শিক্ষক। সেখানে যোগদান করেছেন ৬০২ জন শিক্ষক। কিন্তু যোগদানের এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই প্রায় ১৫০টির অধিক বদলির আবেদন জমা পড়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে।

বাড়ির পাশের কোনো বিদ্যালয়ে পদায়ন করার জন্য আবেদনকারী শিক্ষকদের অনেকে বদলির কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন— বাড়িতে বাবা-মা একা থাকেন; যোগদান করা বিদ্যালয় নিজবাড়ি থেকে ৩০-৪০ কিলোমিটার দূর অথবা দুর্গম এলাকা; যাতায়াতে অসুবিধা প্রভৃতি।

বদলি চেয়ে আবেদনকারী এক শিক্ষক গণমাধ্যমকে বলেন, আমি বাদাঘাট ইউনিয়নে থাকি। কিন্তু আমাকে জয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পদায়ন করা হয়েছে। বিদ্যালয়টি আমার বাড়ি থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে। হাওর এলাকা হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থাও খুব খারাপ। বাসায় আমার মা একা থাকেন। তাই আমি আমার বাড়ির পাশে বিদ্যালয়গুলোতে পদায়ন দেয়ার জন্য আবেদন করেছি।

এদিকে যোগদানের শুরুতে বদলির আবেদন প্রতিষ্ঠান বা শিক্ষার পরিবেশের জন্য ভালো দেখায় না বলে মন্তব্য করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা জানান, সর্বক্ষেত্রে শিক্ষার মান বৃদ্ধির জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের যেখানে পদায়ন করা হয়েছে সেখানেই যোগদান করা প্রয়োজন। যোগদানের শুরুতেই যদি বদলির আবেদন আসে সেটি ভালো দেখায় না। তবে যারা দুর্গম এলাকা থেকে বদলির আবেদন করেছেন তাদের যেনো নতুন কর্মস্থলে এক বছর পার হওয়ার পর বদলি করা হয়।

বদলি আবেদনকারীদের অগ্রধিকার ভিত্তিতে পদায়নের আশ্বাস দিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জিল্লুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের কাছে অনেকগুলো আবেদন জমা পড়েছে। সেখান থেকে আমরা নারী শিক্ষকদের বিষয়টি অগ্রধিকার দিলেও সব আবেদন বিবেচনার মাধ্যমে দেখা হবে। যাদের সমস্যা খুব গুরুতর তাদেরই আমরা কাছের বিদ্যালয়ে পদায়নের ব্যবস্থা করবো। বাকিরা তাদের কর্মস্থলেই থাকবেন।