অনুমতি ছাড়া পাহাড় কাটায় চবিকে ৯ লাখ টাকা জরিমানা

অনুমতি ছাড়া পাহাড় কাটার অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে নয় লাখ পাঁচ হাজার টাকা এবং মেসার্স শেরে বাংলা ফার্নিচার মার্ট ও মেসার্স হানিফ এন্টারপ্রাইজ নামের দুই প্রতিষ্ঠানের এক লাখ ৬০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে শুনানি শেষে অফিস আদেশের মাধ্যমে এ জরিমানা ধার্য করে অধিদপ্তর।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি অধিদপ্তরের একটি দল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পরিদর্শনে গিয়ে বায়োলজিক্যাল সায়েন্স এলাকার পেছনে পাহাড় ও টিলা কাটার প্রমাণ পায়। ওই এলাকায় বিপুল সংখ্যক গাছ কাটারও প্রমাণ পায় তারা।

এরপর ২৬ ফেব্রুয়ারি অধিদপ্তরের এক নোটিসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে শুনানিতে তলব করা হয়।

সোমবার অধিদপ্তরের শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার মাহবুব হারুন চৌধুরী এবং ভারপ্রাপ্ত নিরাপত্তা প্রধান মো. বজল হক।

পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শুনানিতে উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন প্রতিনিধি বলেছেন পাহাড় ও গাছ কাটার সাথে বিশ্ববিদ্যালয় জড়িত নয়।

“তাদের প্রশ্ন করেছি- আপনাদের সীমানার মধ্যে পাহাড় ও গাছ কাটা হল, আপনারা কী মামলা করেছেন? তারা স্বীকার করেছেন তারা কোনো মামলা করেননি।”

মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন বলেন, “দুই প্রতিনিধি জানিয়েছেন, প্রক্টরিয়াল বডির লিখিত আদেশ পেয়ে তারা শুধু গাছ নেওয়ার জন্য গেট পাস দিয়েছিলেন। যারা গাছ কেটেছে তারাই পাহাড় কেটে রাস্তা করেছে।
“শুনানি শেষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নয় লাখ পাঁচ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করে তা এক সপ্তাহের মধ্যে পরিশোধ করতে বলা হয়েছে।”

শুনানির বরাত দিয়ে মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন আরও বলেন, “দুই কাঠ ব্যবসায়ী বলেছেন, তারা মাথায় করে কাঠ পরিবহন করেন। এটা অবিশ্বাস্য ও অসত্য। পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরি করায় তাদের প্রত্যেককে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।”

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম ‍নূর আহম্মদ বলেন, “গত কয়েক বছর আগে স্থানীয়রা জমির খতিয়ানসহ কাগজপত্র দিয়ে বলেছে পাহাড়ে তাদের জমি ও গাছপালা আছে। এভাবে তারা গাছ পরিবহনের অনুমতি নিয়েছিল। “বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম অংশে এখনও সীমানা নির্ধারণ করা হয়নি। সেখানে জমি ও গাছের মালিকানা স্থানীয়দের, বন বিভাগের নাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের তা সুনির্দিষ্টভাবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানে না। পাহাড় কাটার সাথে আমাদের সম্পৃক্ততা নেই সেটা আমাদের প্রতিনিধিরা পরিবেশ অধিদপ্তরে শুনানিতে জানিয়েছেন। ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত চিঠি পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

পাহাড় ঘেরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োলজিক্যাল সায়েন্স এলাকার পেছনে প্রায় পুরোটাই পাহাড়ি এলাকা। এসব পাহাড় থেকে এই দুই কাঠ ব্যবসায়ীসহ আরও কয়েকজন গাছ কাটেন এবং ক্যাম্পাসের ভিতর দিয়ে পরিবহন করে। অনুমোদন ছাড়া পাহাড় কাটা বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ২০০৭ সালের ১০ জুলাই পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে সব ধরনের পাহাড় কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।