প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় চালানোর জন্য পাবলিকের সান্ধ্যকোর্স বন্ধের চেষ্টা

বাংলাদেশকে চালাচ্ছে ছোট্ট একটি গোষ্ঠী। অলিগার্কি বা প্লুটোক্র্যাসির মোক্ষম উদাহরণ বাংলাদেশ। এই গোষ্ঠীর সদস্যদের হাতে সব আছে, সংবাদপত্র, টিভি চ্যানেল, ব্যাংক... সেই সব খবরই তারা প্রকাশ করে, করতে দেয়, যেগুলোতে তাদের স্বার্থহানি হয় না। এদের একটি অংশ ব্যাংক লুট করে, আমানতকারীর টাকা মেরে সেকেন্ড হোম, বেগমপাড়ায় পালিয়ে যাচ্ছে, প্রশাসনের ছত্রছায়ায়।

এই গোষ্ঠীর সদস্যদের নিজস্ব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা যদি সান্ধ্যকোর্সে পড়ায়, তবে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর জন্যে উপযুক্ত শিক্ষক পাওয়া যায় না। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা উচ্চশিক্ষিত, বিদেশি ডিগ্রি আছে, কমবেশি গবেষণাও আছে। নিজেদের শিক্ষকদের বাইরে পাঠিয়ে উচ্চ ডিগ্রি করিয়ে আনাতে যে অর্থ ও সময় দরকার সেই অর্থ ও সময় বিনিয়োগ করতে রাজি নয় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকেরা। সান্ধ্য কোর্স বন্ধ হলে এক ঢিলে দুই পাখি শিকার করা যাবে। খদ্দেররা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে ঝুঁকবে, পড়ানোর জন্য শিক্ষকও পাওয়া যাবে।

অলিগার্কির সদস্যদের বাস কোম্পানি আছে বলে যেমন বাংলাদেশের রেলের উন্নতি হয় না, ঠিক তেমনি তাদের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় চালানোর জন্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্ধ্যকোর্স বন্ধ করতে হবে। পরের ধনে পোদ্দারি আর কাকে বলে! সরকার এই পোদ্দার-হালদারদের হাতের মুঠোয় কিংবা সরকারই তাদের পৃষ্ঠপোষক। সাথে ধুয়া দেবার জন্যে আছে চাটার দল। এদের হাত থেকে সাধারণ মানুষের আশু মুক্তির কোনো সম্ভাবনা নেই।

পুনশ্চ: অলিগার্কি দিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে চাও? দিল্লি দূর অস্ত!

 

লেখক

শিশির ভট্টাচার্য্য

শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়