শ্রীদেবীর স্মৃতিচারণ

‘নায়ককে জড়িয়ে ধরলেও বুকে হাত দুটো রেখে দিতেন’

বলিউডের কিংবদন্তী অভিনেত্রী শ্রীদেবীর মৃত্যুর দুই বছর পার হলো। ৫৪ বছর বয়সে তার অপমৃত্যু এখনো মেনে নিতে পারছেন তার সহশিল্পী ও ভক্তরা। ২০১৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ে শ্রীদেবীর মৃত্যু হয়।

শ্রীদেবীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে ভক্তরা বিভিন্নভাবে স্মরণ করছেন। তার স্মৃতিচারণায় আনন্দবাজার পত্রিকায় লিখেছেন টলিউডের অভিনেত্রী শ্রীলেখা। তিনি লিখেছেন: আমি যতদিন বেঁচে থাকব, আমার স্বপ্নের নায়িকা শ্রীদেবী আমার মধ্যেই থেকে যাবে। সেই কোন ছোটবেলায় ‘হিম্মতওয়ালা’ দেখতে গিয়ে আমার ওর সঙ্গে আলাপ। তার পরে ওর কোনও ছবি আমি বাদ দিইনি। ‘রূপ কি রানী চোরোকা রাজা’ দেখেছি আবার ‘সাদমা’-এর মতো ছবিও দেখেছি। শুধু ভেবেছিলাম একবার দেখা হবে, পায়ের কাছে বসে থাকব। এরকম অনুভূতি শাহরুখ, আমির, সাইফ কারোর সঙ্গে হয়নি।

ওই শিফন শাড়ি, ওই কথা বলার ধরন, ওর জীবনদর্শন সবকিছু আমি অনুসরণ করেছি। একজন অভিনেত্রী হয়ে দেখেছি কীভাবে নায়ককে জড়িয়ে ধরলেও বুকের কাছে তিনি নিজের হাত দুটো রেখে দিতেন। এখানেই তিনি অনন্য। সাক্ষাৎকারে পড়েছি মেয়েদের কীভাবে সামলেছেন। মেয়েরা বড় হলে আজকাল তারা কোনও বারণ শুনতে চায় না। কী করতেন মা শ্রীদেবী তখন? মেয়েদের নাইট পার্টিতে ছেড়ে দিতেন আর নিজে বাইরে গাড়িতে বসে থাকতেন। ভেবেছি, কেন এত রক্ষণশীল ছিলেন? আসলে নিজের শৈশব পাননি শ্রীদেবী। ১০-১১ বছরের একটা মেয়েকে নায়িকা সাজিয়ে সিনেমা করতে বলা হয়েছিল। স্বভাবতই বড় হতে হতে অনেক লড়াই করতে হয়েছে তাকে। তার মেয়েদের সঙ্গে যেন এমনটা না হয় সে দিকে কড়া নজর ছিল।

ওর প্রত্যেকটা চরিত্রের মধ্যে নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছে। অসাধারণ কমিক টাইমিং সেটা ‘চালবাজ’ দেখলেই বোঝা যায়। আজও যখন ওর নাচ দেখি আমার লোম খাড়া হয়ে যায়। ‘চাঁদনী’-তে ওই সাদা কাঁচুলি পরে নাচ... ‘ইংলিশ ভিংলিশ’-এ ওঁর অভিনয়ের অভিনবত্ব। একটু তাকানো। একটু হোঁচট খাওয়া। এগুলো পরিচালক নির্দেশিত নয়, শ্রীদেবীর নিজে থেকেই আসে। এরকম একজন রিফাইন্ড অ্যাক্টর আমার আর চোখে পড়ে না।

আমি বরাবর উত্তম-সৌমিত্রের মতো শ্রীদেবী-মাধুরীর ডিবেটে শ্রীদেবীর পক্ষ নিয়ে লড়াই করেছি। তবে ওঁর এই পরিণতি মেনে নিতে পারিনি। সে দিন সারারাত কেঁদেছিলাম। কিন্তু ওকে জানতে পারলাম কই? ও তো সময়ই দিল না!