ডাকসুতে আর নির্বাচন করবেন না, ফের জানালেন নুর

নুরুল হক নুর

মাস খানেক মেয়াদ আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু)। এরপরই নতুন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নেতৃত্বের রদবদল আসবে দেশের দ্বিতীয় পার্লামেন্ট হিসেবে খ্যাত ডাকসুতে। আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেন না বর্তমান সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর। সোমবার সন্ধ্যায় দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি।

এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে গণমাধ্যমকে তিনি একই মন্তব্য করেছিলেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, আমরা চাই নতুন নেতৃত্ব বিকশিত হোক। আমি যেহেতু একবার ডাকসু ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছি সেহেতু পরবর্তীতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না।

ডাকসুর কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ ৩৬৫ দিন। গত বছরের ২৩ মার্চ দায়িত্ব নেয়া বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হতে আর মাত্র ৩৬ দিন বাকি। মেয়াদ শেষ হলেই নতুন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা। তবে এবার ডাকসু নির্বাচন নিয়ে তেমন একটা আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না প্রশাসনে। ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যেও তেমন তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

প্রায় ২৭ বছর পর ২০১৯ সালের ১১ মার্চ ছাত্রদের সরাসরি ভোটে ডাকসুর নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হয়। ভিপি ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক বাদে বাকি পদগুলোতে ছাত্রলীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। এই দুটি পদে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের দুই নেতা নুরুল হক ও আখতার হোসেন জয়ী হন।

গত নির্বাচনে ভিপি নুর ১ হাজার ৯৩৩ ভোটের ব্যবধানে হারান তৎকালীন ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক শোভনকে। ভিপি পদে নুর পান ১১ হাজার ৬২ ভোট। ছাত্রলীগের ভিপিপ্রার্থী রেজওয়ানুল হক শোভন পান ৯ হাজার ১২৯ ভোট। ওই নির্বাচনে ভোটারের সংখ্যা ছিল ৪৩ হাজার ২৫৫ জন। ভোট পড়ে ২৫ হাজারের কিছু বেশি।

ভিপি পদে বিজয়ী নুর কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ থেকে নির্বাচন করেন।

গত নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হলেও এবার আর নির্বাচন করবেন না ভিপি নুর। নিয়মানুযায়ী তার আবার নির্বাচন করার সুযোগ আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের নিয়মিত মাস্টার্সের এই ছাত্রের বয়স মাত্র ২৫ বছর।

নির্বাচন না করার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আমি ডাকসুতে নতুন নেতৃত্ব দেখতে চাই। আমি চাই নতুন কেউ এই পদে আসুক। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র হিসেবে ছাত্রসংসদের সবচেয়ে বড় পদে আমি নির্বাচন করে জয়ী হয়েছি। তাই আবার একই পদে নির্বাচন করার ইচ্ছা আমার নেই। নানা প্রতিকূলতা সত্ব্বেও ছাত্ররা ভোট দিয়ে আমাকে ভিপি নির্বাচিত করেছেন। আমি চেষ্টা করেছি তাদের পাশে দাঁড়াতে। আমি ভিপি হওয়ার আগেও সাধারণ ছাত্রদের দাবির প্রতি সোচ্ছার ছিলাম, ভিপি হওয়ার পরও ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব।

এবার কে ভিপি পদে নির্বাচন করবে-এমন প্রশ্নে নুর বলেন, এখনও এ বিষয়ে আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণে অনেক কার্যকর নেতৃত্ব আছে, তাদের মধ্য থেকেই একজন ভিপি পদে নির্বাচন করবেন।

সে ক্ষেত্রে কে এগিয়ে আছেন-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদের সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন আছেন, তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্বাচন করবেন। রাশেদ, ফারুকসহ আরও অনেকে আছেন তাদের মধ্য থেকে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ নেতৃত্ব বেছে নেবেন।