ছাত্র অধিকার পরিষদের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন (ভিডিও)

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের বটতলায় বেলুন উডিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্বোধন করা হয়। পরে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করে কেক কাটেন নেতা-কর্মীরা।

এসময় উপস্থিত ছিলেন ডাকসু ভিপি নুরুল হক, ছাত্র অধিকার পরিষদের আহবায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহবায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন, ফারুক হাসান, মশিউর রহমানসহ শতাধিক নেতাকর্মী।

আজকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সংগঠনের নতুন নাম ও স্লোগানের ঘোষণা দেন আহ্বায়ক হাসান আল মামুন। তিনি বলেন, বিভিন্ন আন্দোলনে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার এবং গণ-মানুষের অধিকার আদায়ের অধিকার পরিষদ যৌক্তিক ভূমিকা পালন করেছে। ব্যাপক কারচুপির মধ্য দিয়েও ডাকসু নির্বাচনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সমর্থন লাভ করে সংগঠনটি। আজ থেকে বাংলাদেশে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ নামটি সংক্ষেপে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ করা হলো। এর স্লোগান হবে শিক্ষা, ঐক্য, প্রগতি।

এছাড়া ও লক্ষ্য উদ্দেশ্য বর্ণনা সম্পর্কে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, এটি একটি স্বাধীন ছাত্র সংগঠন হিসেবে কাজ করবে। অন্যায় অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকে গণ মানুষের নৈতিক অধিকার আদায়ে কাজ করবে। সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে গুণগত পরিবর্তনে কাজ করবে। সামাজিক ন্যায়বিচার, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে কাজ করবে।

বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, জেল জুলুম শত বাধা পেরিয়ে আজ আমাদের সংগঠন তৃতীয় বর্ষে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। সারা দেশের মানুষ আজ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের সংগঠন যে যাত্রা শুরু করেছে সেই যাত্রার মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা এগিয়ে যাব।

ডাকসু ভিপি নুরল হক নুর বলেন, বাংলাদেশ সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদ সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আদায়ের জন্য গড়ে ওঠে। অধিকার আদায়ের জন্য এই সংগঠনের জন্ম হয়েছে। এই সংগঠনটি শুরু থেকেই বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম গণমানুষের কল্যাণে কাজ করছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। আমরা চাই, দেশের শিক্ষাঙ্গনগুলোতে যে একটি ভয়ার্ত পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে, শিক্ষাঙ্গনগুলোতে যে মিনি ক্যান্টনমেন্ট তৈরি হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে।

তিনি আরো বলেন, ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে ভয় পায়। একটি কর্তৃত্ববাদী ছাত্রসংগঠনের একক আধিপত্য ক্যাম্পাসগুলোতে চলমান রয়েছে এবং তাদের অপকর্মের সহযোগী হিসেবে রয়েছে শিক্ষাঙ্গনগুলোর প্রশাসন।

ডাকসু ভিপি নুরুল হক বলেন, আমরা চাই, সত্তর-আশির দশকে যে ছাত্র রাজনীতি একটি কল্যাণমূলক রাজনীতি ছিল সেই ছাত্র রাজনীতির প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদকে তুলে ধরতে । যারা সাধারন মানুষ, সাধারণ শিক্ষার্থীর অধিকার আদায়ে কাজ করবে।

ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধের বিষয়ে বলেন, ঊনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান, নব্বইয়ের স্বৈরাচার আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে তৎকালীন সময়ে ছাত্র রাজনীতি একটি বড় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হয়, নব্বইয়ের পরবর্তী সময়ে দেশের ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করে সুপরিকল্পিতভাবে দেশের ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ করে দেশের রাজনৈতিক সংগঠনগুলোকে একটি পেশী শক্তি নির্ভর রাজনীতির নামে একটি অপরাজনীতি দলগুলো চালু করেছে। এর কারণে ক্যাম্পাসগুলো একটি মিনি ক্যান্টনমেন্টে পরিণত হয়েছে। যার বিপরীতে কাজ করছে বাংলাদেশে সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদ।