বাজারে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ নোট-গাইড

বছরের শুরুতে জানুয়ারি আর ফেব্রুয়ারি মাস এলেই জমজমাট হয়ে ওঠে দেশের ছোট-বড় সব ধরণের লাইব্রেরি। ধুম পড়ে যায় নিষিদ্ধ গাইড বই বিক্রির। প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রত্যেকটি লাইব্রেরিতে দেদারসে বিক্রি করা হচ্ছে এসব বই। আর এর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিজ্ঞজনদের মতে, একজন শিক্ষার্থীকে পাঠ্য বইয়ের প্রতি যেমন যথেষ্ট জ্ঞান থাকা দরকার, তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন পারিপার্শ্বিক জ্ঞান। এই দুই জ্ঞানের সমষ্টি মিলে একজন শিক্ষার্থীকে মৌলিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠতে হবে। আর তাতেই জাতি এর সুফল ভোগ করবে।

কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা নোট-গাইড বা সহায়ক বইয়ের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে। দেশের শিক্ষার্থীরা বোর্ড বইয়ের চেয়ে গুরুত্ব বেশি দিচ্ছে গাইড বইয়ের ওপর। তারা পাঠ্য বইয়ের প্রতি ধাবিত না হয়ে গাইড বই মুখস্থ বিদ্যার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছে। এতে করে মৌলিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা বলে অনেকে মনে করছেন।

তাদের মতে, সৃজনশীল পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের একমাত্র সহায়ক হওয়ার কথা পাঠ্যবই। কিন্তু আমাদের দেশের চিত্র ঠিক বিপরীত। অজ্ঞ-বিজ্ঞ নির্বিশেষে অভিভাবকরা যাচাই-বাছাই না করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিচ্ছেন গাইড বই।

অপরদিকে, কিছু অসাধু শিক্ষক বিভিন্ন কোম্পানী থেকে মোটা অঙ্কের টাকা বাণিজ্য করে শিক্ষার্থীদের সেই অনুযায়ী বইয়ের লিস্ট বাধ্যতামুলকভাবে ধরিয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

চট্টগ্রামের একাধিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কোন কোম্পানির বই কিনতে হবে তার লিস্ট বা মৌখিক বলে দেওয়া হচ্ছে। এর বাইরের অন্য কোনো কোম্পানির বই না কেনার জন্যও নিষেধ রয়েছে।

এ কারণ হিসেবে তারা জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানে বইয়ের দেওয়া লিস্ট অনুযায়ী পড়ানো হবে। এমনকি পরীক্ষায়ও হুবহু এই গাইড থেকে প্রশ্ন তুলে দেওয়া হয়। তাই সকলকেই বাধ্য হয়ে কিনতে হয়।

এ ব্যাপারে অধ্যাপক হামিদুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের এই দুর্বলতাকে পুঁজি করে যারা টাকা আত্নসাৎ করছেন তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থার মাধ্যমে বর্তমান শিক্ষার মানোন্নয়ন বজায় রাখা সময়ের দাবি।