ধর্ষণের সব আলামত মিলছে মজনুর সঙ্গে, আসছে নতুন তথ্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার সিরিয়াল রেপিস্ট মজনুকে জিজ্ঞাসাবাদে অনেক তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। প্রাপ্ত তথ্যের সঙ্গে ওই ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনায় সংগৃহীত আলামত হুবহু মিলে যাচ্ছে।

ডিবি গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, সব আলামত পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে প্রতিবেদন জমা হয়েছে ডিবির কাছে। মজনুকে জিজ্ঞাসাবাদেও  তথ্য বেরিয়ে এসেছে। দুই পক্ষের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে মিল রয়েছে।

গত ৮ জানুয়ারি গ্রেপ্তারের পরদিন ৯ জানুয়ারি মজনুকে আদালতে হাজির করা হয়। ডিবি ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সেদিন থেকে ডিবির হেফাজতে মজনুকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

ধর্ষণ মামলা নিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) উপকমিশনার মশিউর রহমান গণমাধ্যমকে বলেছেন, ঢাবি ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হাসপাতালে তার নিকট থেকে নেওয়া তথ্যের সঙ্গে মজনুর দেওয়া তথ্যের মিল রয়েছে। সিআইডি ঘটনাস্থল থেকে ধর্ষণের শিকার মেয়েটির বিভিন্ন আলামতও সংগ্রহ করে। সেগুলো ফরেনসিক ল্যাবে পরীক্ষায় পাঠানো হয়।

তিনি জানান, যে প্রতিবেদন পাওয়া গেছে, তার সঙ্গে ধর্ষক মজনুর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রতিবেদনে মিল রয়েছে। এখন ওই তরুণীর ভ্যাজাইনাল সোয়াবের সঙ্গে মজনুর ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন ম্যাচিং বাকি। বাকি সব পরীক্ষার প্রতিবেদন মিলেছে। এতে প্রতীয়মান হয় যে, মজনু ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেছে।

মশিউর রহমান জানান, রিমান্ড শেষে মজনুকে আদালতে পাঠানো হবে। সেখানে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেবে বলে সম্মত হয়েছে মজনু। তার জবানবন্দি পাওয়া গেলে এবং ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন হাতে এলে কিছুদিনের মধ্যেই চার্জশিট দেওয়া হবে।

ডিবি সূত্রে জানা গেছে, ডিবির কাছে রিমান্ডে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে মজনু। এছাড়া গত ১০ বছর ধরে একাধিক প্রতিবন্ধী ও ভিক্ষুক নারীকে ধর্ষণের কথাও স্বীকার করেছে সে। একাই বিভিন্ন সময়ে ধর্ষণ করেছে মজনু। তার সঙ্গে আর কেউ ছিল না বলেও জানিয়েছে সে।

রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের মামলায় ওই ছাত্রী নিজে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। গত শুক্রবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসমিন আরা ফৌজদারি কার্যবিধির ২২ ধারায় ভিকটিমের এ জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

গত ৫ জানুয়ারি ক্যান্টনমেন্ট থানার কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ড হতে ৪০-৫০ গজ সামনে আর্মি গলফ ক্লাব মাঠ সংলগ্ন স্থানে পৌঁছায় ভিকটিম। এরপর আসামি পেছনের দিক থেকে ভিকটিমের গলা ধরে ফুটপাতে ফেলে দেয়। এরপর গলা চেপে ধরে। ভিকটিম চিৎকার করতে গেলে আসামি তাকে কিল-ঘুষি মেরে ভয়ভীতি দেখালে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন।

তখন মজনু ভিকটিমকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ৬ জানুয়ারি সকালে অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে ওই ছাত্রীর বাবা ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত করছে। বুধবার ভোর শেওড়াপাড়া এলাকা থেকে ‘ধর্ষক’ মজনুকে আটক করে র‌্যাব।