মাদ্রাসাছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু, বাবার অভিযোগ ধর্ষণ

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়ন জামিয়া ইসলামিয়া মারকাজুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানার মক্তব বিভাগের আট বছর বয়সী এক আবাসিক শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শিশুটির নাম আবদুর রহমান। সে আবদুর রহমান ফরিদপুরের সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের রাঙারদিয়া গ্রামের আবদুস সোবহানের ছেলে।

গত বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) এ ঘটনায় সকাল আটটার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়ে থাকতে পারে। তার শরীরে এ–জাতীয় সিনড্রোম (লক্ষণ) রয়েছে।

নিহতের বাবা সোবহান বলেন, তাঁর ছেলে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। আজ ভোরে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানায় তার ছেলে অসুস্থ। এর পরপরই আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে অসুস্থ অবস্থায় ছেলেকে দেখতে পেয়েছি। পরে অবস্থা সংকটাপন্ন দেখে ছেলেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর সকাল আটটার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি আরও বলেন, তিন বছর আগে আবদুর রহমান এ মাদ্রাসায় পড়তে আসে। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে আবদুর রহমান বড়।

শিশুটির মা সুমাইয়া আক্তার বলেন, তাঁর ছেলে সম্পূর্ণ সুস্থ ছিল। সুমাইয়ার অভিযোগ, তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তিনি তাদের বিচার চান।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিন বছরে মাদ্রাসাটিতে এ ধরনের দুটি ঘটনা এলাকায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছিল। তবে এ ব্যাপারে কোনো আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বেলাল হোসেন বলেন, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে শিশু আবদুর রহমানের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

চরভদ্রাসন পুলিশ ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবদুস সবুর, শিক্ষক আবদুল আসাদ, মোহতামিম বিল্লা, ছাত্র রবিউল ইসলামসহ বেশ কয়েকজনকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ বলেন, এ ব্যাপারে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ শিক্ষক ও ছাত্রদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওই মাদ্রাসার কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান করা হচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওই মাদ্রাসার কয়েকজন আবাসিক শিক্ষার্থী জানায়, আজ ফজরের সময় অজু করতে গিয়ে দেখা যায়, আবদুর রহমান অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে, মাদ্রাসাটিতে আবাসিক শিক্ষার্থী ২৫০ জন।