সব বুদ্ধিজীবী মুক্তিযুদ্ধপন্থী ছিলেন না

শেখ আদনান ফাহাদ
শেখ আদনান ফাহাদ

সব বুদ্ধিজীবী মুক্তিযুদ্ধ-পন্থী ছিলেন না। কেউ কেউ সরাসরি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দোসর হিসেবে কাজ করেছেন। অনেক ‘বুদ্ধিজীবী’ মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস রেগুলার চাকরি করেছেন, বেতন ভাতা নিয়েছেন-যেমন আব্দুল্লাহ আবু সাইদ ঢাকা কলেজে চাকরি করেছেন। আবার অনেকে আছেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় ছাত্র ছিলেন, কিন্তু যুদ্ধে কোনোভাবেই অংশগ্রহণ করেননি।

ঢাকায় কিংবা গ্রামে পালিয়ে থেকেছেন, অনেক বুদ্ধিজীবী ভারতে পালিয়ে গিয়ে নিরাপদে থেকেছেন। কিন্ত স্বাধীন বাংলাদেশে এরাই আবার চেতনার বড় বড় পিলার হয়ে গেছেন। ভারতে পালিয়ে যাওয়া মানেই কিন্তু আপনি মুক্তিযোদ্ধা না। সাহিত্যিক শওকত ওসমান স্যার কিংবা নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু স্যার যুদ্ধে গেছেন। সবাই অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করবেন না, এটা আমরা জানি।

ওই সময় ঢাবির অনেক শিক্ষক, শিক্ষার্থী শহীদ হয়েছেন। অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীও আছেন। কয়জন শিক্ষক ছিলেন যারা সক্রিয় মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন? যে কোনো উপায়ে সক্রিয়। কয়জন যুদ্ধ করেছেন, কয়জন শিক্ষক পাকিস্তানের বর্বরতার বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছেন? কয়জন গেরিলাদের ভাত-মাছ খাইয়েছেন? কয়জন গোপন খবর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন? কয়জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক গেরিলাদের অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছেন?

কয়জন মুক্তিযুদ্ধের গান লিখেছেন? কবিতা লিখেছেন? সে সময় কি ঢাবি বন্ধ ছিল? ২৫ মার্চের রাত এবং এর পরের কয়েকদিন বন্ধ ছিল জানি। কিন্তু পুরো ৯ মাস কি বন্ধ ছিল? এ সংক্রান্ত কোনো বই থাকলে জানাবেন প্লিজ। নাট্যকার, কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পী, শিক্ষক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার নানা পরিচয়ের প্রগতিশীল, মেধাবী মানুষগুলোর জন্য আমার মন থেকে ভালোবাসা। উনারা বেঁচে থাকলে, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে প্রথম ১০ বছরেই শক্ত ভিত্তি পেত স্বাধীন বাংলাদেশ। (লেখকের ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

লেখক: শিক্ষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়