‘আমাদের মেয়াদ শেষ’ বলেই সার্টিফিকেটে আগুন দেয় আন্দোলনকারীরা

চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে অষ্টম দিনের মত চলছে আন্দোলনকারীদের গণঅনশন এবং মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচী। নিয়মিত কর্মসূচীর সঙ্গে সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলার কর্মসূচী ডাকে আন্দোলনকারীরা। কর্মসূচীতে ‘আমাদের মেয়াদ শেষ’ ‘আমাদের সুযোগ ‍দিন’ এসব বলেই সবাই নিজেদের সার্টিফিকেটে আগুন ধরিয়ে দেয়।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলনকারীদের নিয়মিত কর্মসূচী শেষে সার্টিফিকেটে অগ্নিসংযোগ কর্মসূচী পালন করেন তারা।

প্রেসক্লাবের সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে প্রত্যেকে নিজেদের হাতে সার্টিফিকেট নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় ৩৫ প্রত্যাশী সকলের চোখে-মুখে হতাশার ছাপ লক্ষ করা করা গেছে। পাশাপাশি তাদের ‘আমরা সার্টিফিকেট চাই না, চাকরির বয়স ৩৫ করে দিন’ ‘আমাদের মেয়াদ শেষ, আমাদের সুযোগ দিন’ এসব বাক্য বলতে দেখা গেছে।

দীর্ঘদিন যাবৎ চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে আন্দোলন করে আসছে চাকরি প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ গত শুক্রবার (০৬ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টা থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণঅনশন শুরু করেন করেন আন্দোলনকারীরা। তারা বলছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে।

তাদের ৪ দফা দাবি হলো- চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করে ৩৫ বছরে উন্নীত করা; চাকরির আবেদন ফি কমিয়ে ৫০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে নির্ধারণ করা; চাকরির নিয়োগ পরীক্ষাগুলো জেলা কিংবা বিভাগীয় পর্যায়ে নেওয়া ও চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়া তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা এবং সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা।

আন্দোলনকারী বলছে, বর্তমান সরকারের ইশতিহার অনুযায়ী তাঁরা ক্ষমতায় আসলে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করবে। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন ‘৩৫’ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা হয়েছে। আলোচনার বিষয়ে তোমাদের দ্রুত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় যে কোন প্রকার সিদ্ধান্ত না জানিয়ে ৪১তম বিসিএসের সার্কুলার দিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যার কারণে দেশব্যাপী লক্ষাধিক ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী ক্ষুদ্ধ হয়ে পড়েছে।

দেখুন: সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলবে ৩৫ আন্দোলনকারীরা

‘৩৫ চাই’ আন্দোলনের কর্মী রেশমা আক্তার বলেন, চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ করাসহ ৪ দফা দাবিগুলো সময়ের সেরা যৌক্তিক দাবি। এই দাবি মেনে নিতে কালক্ষেপণ করলে শুধু সরকারের জন্যই না জাতির জন্যও এটা বড় এক ক্ষতি হবে বলে আমি মনে করি।

বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্রকল্যাণ পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক সুরাইয়া ইয়াসমিন বলেন, আমাদের মেধার মেয়াদ যেহেতু শেষ, এখন আমরা বেঁচে থেকে কি লাভ। যেখানে আমাদের মেধার মেয়াদ শেষ, সেখানে আমাদের সার্টিফিকেটের কোন মূল্য নেই। তাই আমরা সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলেছি। এটা তো আমাদের অভিমান, সরকারকে আমাদের অভিমান বুঝতে হবে।