ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর ‘প্রজেক্ট বাংলাদেশ’–এর গল্প

তারুণ্যের শক্তিকে যে আটকে রাখা যায় না, সেটি যেন আরও একবার দেখিয়ে দিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী মাহবুব আল হাসান ও তাওসিফ রহমান। মাহবুব ইতিহাস বিভাগের ও তাওসিফ অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। সম্প্রতি কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে মিলে তারা গড়ে তুলেছেন ‘প্রজেক্ট বাংলাদেশ’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। নিজেদের জমানো টাকা খরচ করে তারা ছুটে গেছেন বাংলাদেশের ৫টি বিভাগের ৫টি জেলার নামকরা ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। প্রায় ৩ হাজার ছাত্রছাত্রীর জন্য ‘কোয়েস্ট ফর এক্সেলেন্স’ নামে দক্ষতা উন্নয়নবিষয়ক ওয়ার্কশপের ব্যবস্থা করেছেন।

চতুর্থ বর্ষের এই দুই শিক্ষার্থীর জন্মগ্রহণ ও বেড়ে ওঠা যশোরে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাসের পর ২০১৫ সালে দুজনই ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকে দুজনই বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের সামাজিক কাজে অংশ নিয়েছেন। দুজনই ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছায়া জাতিসংঘ সংস্থার কার্যনির্বাহী সদস্য।

কেন এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ? প্রশ্নের জবাবে মাহবুব বললেন, ‘বাংলাদেশ দিন দিন অনেক উন্নত হচ্ছে, সরকার শিক্ষা খাতে ও যুব-উন্নয়ন খাতে প্রচুর বরাদ্দ দিচ্ছে। কিন্তু শিক্ষিত ছেলেমেয়েদের কর্মসংস্থানের দিকে তাকালে আমাদের হতাশ হতে হচ্ছে। এর পেছনে মূলত দায়ী আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি অথবা ছাত্রছাত্রীদের উপযুক্ত দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগের স্বল্পতা। তাই আমরা চিন্তা করলাম কীভাবে এই অবস্থা পরিবর্তন করা যায়। সেই চিন্তা থেকেই প্রজেক্ট বাংলাদেশের যাত্রা শুরু। এই প্রজেক্টের প্রথম পদক্ষেপ কোয়েস্ট ফর এক্সেলেন্স। আগামী দুই বছরের মধ্যে এই প্রজেক্ট নিয়ে দেশের প্রতিটি জেলায় যেতে চাই আমরা।’

কোয়েস্ট ফর এক্সেলেন্স সম্পর্কে তাওসিফ বলেন, ‘যে অনুপাতে মানুষ আক্ষরিক অর্থে শিক্ষিত হচ্ছে, সেই অনুপাতে তারা যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন করতে পারছে না। পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন দক্ষতা উন্নত করার সুযোগ শহরাঞ্চলে কিছুটা থাকলেও মফস্বল এলাকায় তুলনামূলকভাবে কম। তাই আমরা কোয়েস্ট ফর এক্সেলেন্সের মাধ্যমে চেষ্টা করছি দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কিছু প্রয়োজনীয় দক্ষতা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দিতে, যেগুলো তাদের ভবিষ্যৎ জীবনে এগিয়ে যেতে কিছুটা হলেও সাহায্য করবে।’