বুয়েট আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলন সমাপ্তির মধ্যদিয়ে ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরবেন শিক্ষার্থীরা। তাদের সকল দাবি মেনে নেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান আন্দোলনকারীরা।

বুধবার (০৪ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আয়োজিত আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন থেকে এ ঘোষণার কথা জানানো হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেন ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান সায়েম।

এদিকে গত সোমবার রাতে র‌্যাগিং ও ছাত্র রাজনীতির সর্বোচ্চ শাস্তি চিরতরে বহিষ্কার নির্ধারণ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ। এর মাধ্যমে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির সব কটি পূরণ হলো।

গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করেন ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী। এরপর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনের মুখে কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করাসহ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি মেনে নেয়। সর্বশেষ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। গত বুধবার বুয়েটের ভিসি অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেছিলেন, তিন দফা দাবি পূরণ হলে আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা দিতে তারা প্রস্তুত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে প্রশাসন সব শর্ত পূরণ করেছে। আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণে আর কোনও বাধা নেই।

জানা যায়, গত ৬ অক্টোবর রাতে শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মীদের নির্যাতনে আবরারের মৃত্যু হলে অনির্দ্দিষ্টকালের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনে অচল হয়ে পড়ে বুয়েট। শিক্ষার্থীদের ১০ দফার কয়েকটি মেনে নেওয়ার পর গত ১৫ অক্টোবর মাঠের আন্দোলন থেকে সরে আসে বুয়েট শিক্ষার্থীরা; তবে মামলার অভিযোগপত্র ও অন্য দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষায় না ফেরার ঘোষণা দেয়।

পাঁচ সপ্তাহের তদন্ত শেষে পুলিশ গত ১৩ নভেম্বর ২৫ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দিলে ক্লাস-পরীক্ষায় ফেরার জন্য বুয়েট কর্তৃপক্ষকে আরও তিনটি শর্ত দেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসব দাবিগুলো হলো-অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বুয়েট থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার; আহসানউল্লাহ, তিতুমীর ও সোহরাওয়ার্দী হলের আগের র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় অভিযুক্তদের অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া এবং সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি ও র‌্যাগিংয়ের জন্য সুস্পষ্টভাবে বিভিন্ন ধাপে ভাগ করে শাস্তির নীতিমালা করে বুয়েটের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট থেকে অনুমোদন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্সে তা অন্তর্ভুক্ত করা।