চান্স পেয়েও ভর্তি হতে না পারার অভিযোগ!

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক ভর্তি পরীক্ষায় এ ইউনিটে চারুকলা অনুষদে সুযোগ পেয়েও বিষয় নির্বাচন তালিকা দিতে না পারায় ভর্তি হতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ভর্তিচ্ছুরা।

তাদের অভিযোগ, যান্ত্রিক ও কারিগরি ত্রুটির কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনলাইনে তারা বিষয় নির্বাচন করতে পারেননি। তবে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না জানানোয় খুব সম্ভবত তারা ভর্তি হতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন এ ইউনিটের কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক এম এহসান কবির।

ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের একজন শেখ মারজান বিনতে আলম বলেন, ‘আমি এ ইউনিটে চারুকলায় পরীক্ষা দিয়েছিলাম। লিখিত পরীক্ষায় পাশ করার পর আমি ব্যাবহারিক পরীক্ষা দেই। পরীক্ষার ফলাফলে আমি মেরিট তালিকায় ৮৯ নম্বরে ও অপেক্ষমান তালিকায় ১৯ নম্বরে থাকি।’ ‘ফলাফল প্রকাশের পর গত ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত বিষয় নির্বাচনের জন্য সময় দেয়া হয়। ভর্তির জন্য বিষয় নির্বাচন দিতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে আমার বিষয় নির্বাচন করা সম্ভব হচ্ছিল না। বারবার চেষ্টার পরও ওয়েবসাইটে আমাকে বিষয় নির্বাচনের সুযোগ দেয়া হচ্ছিল না। বারবার চেষ্টা করেও আমি চয়েস দিতে পারিনি। পরে প্রথম অপেক্ষমান তালিকা প্রকাশ হলে দেখি আমার নাম আসে নাই।’

‘বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করি। তারা আমাকে বিষয় নির্বাচন তালিকা দিয়ে একটি দরখাস্ত লিখে জমা দিতে বলেন। আমি যখন অ্যাপ্লিকেশন জমা দিতে আসি, তখন আরো কয়েকজন একই সমস্যা নিয়ে দরখাস্ত দিতে এসেছিল। প্রথমে আমরা চারুকলা অনুষদের ডিন বরাবর দরখাস্ত করি। সেখানে আমাদেরকে আইন অনুষদের ডিন বরাবর দরখাস্ত জমা দিতে বলা হয়। দরখাস্ত জমা নেয়ার পর আমাদেরকে খোঁজ-খবর রাখতে বলা হয়। বলা হয়, একটি মিটিং ডেকে পেপারস বিষয়ে ডিসকাস করে অ্যাপ্রুভ করা হবে। অ্যাপ্রুভ না হলে তাও জানিয়ে দেয়া হবে। এদিকে, আজ-কালই সেকেন্ড ওয়েটিং লিস্ট দেয়ার কথা।’

‘আমাদেরকে কোন ধরনের যোগাযোগের সময়, স্থান ও মাধ্যম জানানো হয়নি। বলা হয়েছে, মিটিং হলে জানতে পারবে। আমার মামা ডিন স্যারের সাথে কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, মিটিং হয় নাই। সবাই ভর্তি হওয়ার পর যদি সিট খালি থাকে তাহলে আমি তাদেরকে ডাকতে পারি।’

এই ইউনিটের কো-অর্ডিনেটর ও আইন অনুষদের অধিকর্তা অধ্যাপক এম এহসান কবির বলেন, ‘যারা তখনই অনলাইনে ভর্তির ফর্ম ফিলাপ করতে পারেননি তাদের এখন আর কোন সুযোগ নাই। এবং এটা তাদের ফল্ট। তারপরেও আমরা দরখাস্ত নিয়েছি। শেষের দিকে ভাইস চ্যান্সেলর যদি অনুমোদন দেন, ভর্তি কমিটিতে যদি তা ইনফর্ম করা হয়, তাহলে বিষয়টি আমরা ভেবে দেখবো।’ ‘যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে যদি এমন হয় তাহলে তো তারা আইসিটি বিভাগের সাথে যোগাযোগ করেনি। সবাই করতে পারলো আর তারা করতে পারেনি এটা কেমন হল কথাটা।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অ্যাডমিশন টেস্টের সকল প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরে অ্যাডমিশন নিয়ে কমিটির একটি মিটিং করা হবে তখন হয়তো বিষয়টি আলোচনা হতে পারে। হবেই এমনটি বলা যেতে পারে না। এটি ভাইস চ্যান্সেলরের এখতিয়ার। তবে সম্ভবত এটা হবে না। এটা তো একটা প্রক্রিয়া।’

ভর্তি চলাকালীন সার্ভারে কোন সমস্যা ছিলো কীনা জানতে চাইলে আইসিটি সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক খাদেমুল ইসলাম মোল্যা বলেন, ‘আমাকে জানায়নি কেন? হেল্পলাইন খোলা ছিলো। সাবজেক্ট চয়েসের সময় ২০ তারিখ পর্যন্ত ছিলো। ৩ দিন বাড়িয়ে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত করা হয়। এতদিন ধরে করতে পারেনি। পরে অ্যাপ্লিকেশন করলোই বা কীভাবে? তিনদিন ধরে কী সার্ভার বন্ধ ছিলো? বাকি সবাই দিতে পারছে আর ঐ কয়জন দিতে পারেনি।’