মতবিরোধের জেরে শিক্ষার্থীদের ফেল করিয়ে দেন সেই আক্কাছ

সিএসই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং সাবেক সভাপতি আক্কাছ আলী

মতবিরোধের জেরে অনৈতিকভাবে পরীক্ষায় ফেল করানোসহ নম্বর কম দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত শিক্ষক সিএসই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং সাবেক সভাপতি আক্কাছ আলী।

অভিযোগকারী শিক্ষার্থীরা জানান, সিআর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মতবিরোধ হওয়ায় ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের ১৫ জন শিক্ষার্থীকে ফেল করানোসহ ১৭ জনকে অনৈতিকভাবে নম্বর কম দিয়েছিলেন আক্কাছ আলী।

ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন জানান, ২০১৭ সালের শেষের দিকে আমরা আমাদের ক্লাসের ক্লাস রিপ্রেজেনটেটিভ (সিআর) পরিবর্তন করি। যাকে পরিবর্তন করা হয় তিনি আক্কাছ আলীর অত্যন্ত প্রিয় হওয়ায় আক্কাছ আলী আমাদের ওপর রেগে যান এবং বলেন আমরা এভাবে সিআর পরিবর্তন করতে পারিনা।

শাহাদাত বলেন, আমরা ১৭ জন সিআর পরিবর্তনের যৌক্তিকতা বুঝাতে আক্কাছ আলীর সাথে কথা বলি। এসময় তিনি আমাদের সকল যুক্তি অগ্রাহ্য করে আমাদের পাস করে বের হতে দিবেন না বলে হুমকি দেন। এর কিছুদিন পরই আমাদের চতুর্থ বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয় এবং আমরা ১৭ জনের সকলেই প্রচন্ড খারাপ ফলাফল করি। আক্কাছ আলী ওইসময় পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন। আমরা পরীক্ষা ভালো দিলেও তার কোর্সসহ খণ্ডকালীন তিনজন শিক্ষকের কোর্সে খারাপ ফলাফল দেখানো হয়।

এতদিন পরে কেনো অভিযোগ করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে এই শিক্ষার্থীরা জানান, আক্কাছ আলীর বিভিন্ন হুমকি এবং তৎকালীন উপাচার্যের সাথে তার অত্যন্ত ভালো সম্পর্ক থাকায় আমরা ওইসময় প্রতিবাদ করতে পারিনি। কিন্তু এখন আমরা এই ঘটনার বিচার চাই যাতে ভবিষ্যতে এ ধরণের কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।

এদিকে এই ১৭ জন শিক্ষার্থীর পূর্বের ৬টি সেমিস্টারের ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, তাদের অধিকাংশেরই পূর্বের সেমিস্টারগুলোতে সিজিপিএ ৩.২৫ এর ওপরে ছিলো।

এ বিষয়ে বিভাগের শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, তারা সকলেই পারফরম্যান্স অনুযায়ী নম্বর দিয়েছিলেন কিন্তু তাদের প্রদত্ত গ্রেড পরিবর্তিতে পরিবর্তন করা হয়েছিলো কিনা এটি তারা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না এবং এ বিষয়ে তৎকালীন পরীক্ষা কমিটির সভাপতির (আক্কাছ আলী) সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে আক্কাছ আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বেলন, আমি কিছু করিনি, এ বিষয়ে আর কোনো বক্তব্য দিতে চাচ্ছিনা।

উল্লেখ্য, দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে গত ১৯ এপ্রিল সিএসই বিভাগের সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কারসহ চার বছরের জন্য সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে অভিযুক্ত শিক্ষক আক্কাছ আলীকে।