সালাম না দেয়ায় ছাত্রলীগের নির্যাতন: মন্ত্রণালয়ের নির্দেশেও ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ছাত্রলীগ নেতাকে সালাম না দেওয়ায় গভীর রাত পর্যন্ত হলের কক্ষে আটকে রেখে এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় ব্যবস্থা গ্রহণে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্দেশ দিলেও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন পাঠানো হলেও দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জামাল হোসেন হল ছাত্রলীগের সভাপতি দীপক হালদারকে সালাম না দেয়ায় মাকসুদুল হক ইমু নামের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীকে রাত ১টার দিকে হলের পূর্ব ব্লকের ৫ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে যায় হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি আবদুল্লাহ্ হিশ শাফি, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহাদাত হোসেন শাওন এবং পাঠাগার সম্পাদক মো. রাহাত হোসেন। এ সময় হল ছাত্রলীগ সভাপতির নির্দেশক্রমে ইমুকে স্ট্যাম্প দিয়ে মারধর করেন হল ছাত্রলীগের নেতারা।

নির্যাতনের ঘটনার পরের দিন (৬ আগস্ট ২০১৯) তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. ছাইফুল ইসলামের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. আজহারুল ইসলাম, ফসল উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. জাকির হোসেন এবং সহকারী প্রক্টর চয়ন গোস্বামীকে সদস্য করে কমিটি গঠন করা হয়। তবে কত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হবে, বিজ্ঞপ্তিতে সে বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া ছিল না।

এ ঘটনার পর বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেটি উল্লেখ করে গত ২১ অক্টোবর এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কি ব্যবস্থা নিয়েছে তা ৭ কার্যদিবসের মধ্যে জানতে চায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে প্রশাসনকে এ বিষয়ে এখনও কোন দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। এদিকে ইমু নামের ওই শিক্ষার্থী বর্তমানে হলে থাকছেন না। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নির্যাতনের ভয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী কেওয়াটখালি মেসে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন।

এখন পর্যন্ত কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলাম। তদন্ত কমিটি কর্তৃক সুপারিশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বলেন, বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় আইন উপদেষ্টার কাছে রয়েছে। আমরা এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবো বলে আশা করছি।