কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের ৭১তম জন্মদিন আজ

আজ বুধবার জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক, বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের ৭১তম জন্মদিন। ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর ময়মনসিংহ জেলার অন্তর্গত নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়ার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। যাদুর কলকাঠিতে কয়েক প্রজন্মকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছেন হুমায়ূন আহমেদ। ছোটগল্প, উপন্যাস, নাটক, গান বা চলচ্চিত্র, যেখানেই হাত দিয়েছেন, তা সমৃদ্ধ করেছেন নিপুন দক্ষতায়।

১৯৭২ সালে তার প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস নন্দিত নরকের ভূমিকায় খ্যাতিমান আহমেদ শরীফ লিখেছিলেন তার প্রতিভার কথা। এরপর আসলেই আর থেমে থাকেননি হুমায়ূন। শত ফুল ফুটিয়ে রাঙিয়েছেন এ দেশের সাহিত্য অঙ্গন। মধ্যবিত্ত পাঠক, যাদের কাছে এক সময় পশ্চিম বাংলার গল্প-উপন্যাসই ছিলো সাহিত্য আস্বাদনের মূল অবলম্বন, তাদের ফিরিয়েছেন। সহজ আলোয় তুলে এনেছেন মানবীয় সম্পর্কের নানা দিক, নানা অধ্যায়।

জন্ম দিয়েছেন বাংলা নাটকে বাকের ভাইয়ের মতো চরিত্র। রুপালি পর্দায় উপহার দিয়েছেন শ্রাবন মেঘের দিন, দুই দুয়ারি, ঘেটুপুত্র কমলার মতো দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্র। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তার জোছনা ও জননীর গল্প, আগুনের পরশমনি চলচ্চিত্র থাকবে কালজয়ী হয়ে। বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীতেও তাঁর শিল্পকৌশল স্পষ্ট। এ দেশের বইমেলায় তাই বছরের পর বছর তাঁর বই বিক্রি হয়েছে দেদার, এখনো কমেনি সেই জনপ্রিয়তা।

ব্যক্তিজীবনে কিছুটা খামখেয়ালি ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। সমুদ্র ভালোবাসতেন। তাই সেন্টমার্টিনে এক টুকরো জমি কিনে গড়েন সমুদ্র বিলাস। বৃষ্টি পছন্দ করেন। তাই নুহাশ পল্লীর সবুজাভ নিসর্গে গড়েছেন আশ্রয়। অনেকটা তার সৃষ্ট চরিত্র হিমু যেন তাঁরই প্রতিচ্ছবি।  

চাঁদনি পসর রাতে মরতে চেয়েছিলেন। ঘাতক ক্যান্সার তাকে কেড়ে নিয়েছে ঠিকই। কিন্তু মন কাঁদলেই যে তিনি আবার চলে আসবেন, এ বিশ্বাস এখনো তার ভক্তদের বুকের গহীনে সযত্নে লালিত। জনপ্রিয় এই কথাসাহিত্যিক কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই মৃত্যুবরণ  করেন।