বশেমুরবিপ্রবিতে চার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শিক্ষক নির্যাতনের অভিযোগ

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) আইন বিভাগের চার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন ওই বিভাগের শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুস মিয়া। গত ৩০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. নুরুদ্দীন আহমেদের নিকট এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগে করেছেন তিনি।

অভিযোগপত্রে আব্দুল কুদ্দুস মিয়া লিখেছেন, গত ২৯ অক্টোবর আইন বিভাগের চার শিক্ষার্থী হাসান আলী, বরকত উল্লাহ নাঈম, এস এম আব্দুল্লাহ কাফি এবং মোহাম্মদ সোলায়মান রাব্বি তার রুমে ঢুকে দরজা জানালা বন্ধ করে পদত্যাগের জন্য চাপ প্রয়োগ করে এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। আর এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ওই সময় আমার আবরারের কথা মনে হয় যে ছাত্ররা শারিরীক নির্যাতন করে তার মৃত্যু ঘটিয়েছে আর মানষিক নির্যাতনে আমার মৃত্যু ঘটানো হলে আইনগত প্রতিকার থাকবেনা।

এ বিষয়ে অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান তারা শুধুমাত্র পদত্যাগ করার দাবি জানিয়েছিলেন। অভিযুক্ত কাফি বলেন, "তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অমান্য করে ডিন হয়েছেন। তাছাড়া শিপইয়ার্ড থেকে দুই কোটি টাকার বই কেনার মত অবৈধ কাজগুলোর সাথেও তিনি সরাসরি যুক্ত ছিলেন। এসকল কারণে আমরা তার পদত্যাগ দাবি করেছিলাম। তিনি যেহেতু আমাদের শিক্ষক আমরা চাইনি আন্দোলন করতে, এতে তার সম্মানহানি হতে পারে।  আর একারণেই তাকে অনুরোধ করতে গিয়েছিলাম।"

অভিযোগপত্রে প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে আব্দুল কুদ্দুস মিয়া ইন্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন প্রপেসর ড. বি কে বালা এবং জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এম এ সাত্তারের নাম উল্লেখ করেন। এ বিষয়ে বি কে বালার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, " আমি রুমে প্রবেশ করতে চাইলে শিক্ষার্থীরা আমায় একটু পরে আসতে বলে। তারা হয়তো জানতো না আমিও ওই রুমে বসি। আমি যখন তাদের বলি যে আমিও এখানে বসি তখন তারা আমাকে প্রবেশ করতে দেয়। এসময় আমি শিক্ষার্থীদের কোনোরূপ খারাপ আচরণ বা ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে দেখিনি, তারা শুধুমাত্র পদত্যাগ দাবি করেছিলো।" জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন এম এ সাত্তার এ বিষয়ে জানান, "আমি ঘটনার পরে রুমে প্রবেশ করে কুদ্দুস মিয়ার কাছ থেকে বিস্তারিত শুনি।"

এদিকে ঘটনা তদন্তে প্রফেসর ড. এম এ সাত্তারকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তদন্ত কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে  রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বশেমুরবিপ্রবি আইন ২০০১ এর ২৩ নং ধারার ৫ নং উপধারায় বলা হয়েছে কোন অনুষদের ডিন হতে হলে তাকে নূন্যতম সহযোগী অধ্যাপক হতে হবে। কিন্তু আব্দুল কুদ্দুস মিয়া অধ্যাপক বা সহযোগী অধ্যাপক নন, তিনি শুধুমাত্র একজন চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক। এসকল কারণে গত ৯ সেপ্টেম্বর আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা আব্দুল কুদ্দুস মিয়ার অপসারণ দাবি করে রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন করে। কিন্তু প্রায় একমাস পেরিয়ে গেলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এবিষয়ে রেজিস্ট্রার ড. নুরুদ্দীন আহমেদকে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।