আজও আন্দোলনে আহসানউল্লাহ শিক্ষার্থীরা (ভিডিও)

আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগসহ নয় দফা দাবিতে আজ বৃহস্পতিবারও আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। গত সোমবার থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

তারা বলছেন, দাবি পূরণ না হলে আগামী ২ নভেম্বর ভর্তি পরীক্ষা হতে দেয়া হবে না। এছাড়া, একাডেমি ও প্রশাসনিক সব কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। প্রশাসনিক সব দায়িত্ব থেকে তাকে (ভিসি) না সরানো পর্যন্ত এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, ভারপ্রাপ্ত হিসাবে পদে আসার পর থেকে নানা রকম ‘স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত’ নিয়ে আসছেন উপাচার্য। উপাচার্য পদে ভারপ্রাপ্ত থাকাবস্থায় উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষসহ পাঁচটি পদে ভারপ্রাপ্ত হিসাবে রয়েছেন তিনি। উপাচার্যের পদত্যাগের পাশাপাশি তার সময়ে নেওয়া সব প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিও করছেন তারা।

নয় দফা দাবিতে সোমবারই বিক্ষোভ দেখিয়েছিল শিক্ষার্থীরা। এরপর মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।

আন্দোলনকারীরা বলেন, ক্ষমতার জোরে অবৈধভাবে আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদে বসেছেন অধ্যাপক ড. কাজী শরিফুল আলম। শুধু তাই নয়, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন পদ দখল করা হয়েছে। গত রোববার আমাদের সমাবর্তন হওয়ার কথা থাকলেও ভিসির কারণে শিক্ষামন্ত্রী তা বর্জন করেন।

তারা জানান, কাজী শরিফুল আলম ভিসি হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের নানা অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। অকারণে সেমিস্টার ফি বৃদ্ধি করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে চাইলে ভিসি তা অনুমোদন দেন না। এই ভিসির জন্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করলে তার ছাত্রত্ব বাতিলের হুমকি দেয়া হয়।

তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে:

১. ভিসিকে প্রশাসনিক সব পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। তিনি দায়িত্বরত অবস্থায় নেয়া সব প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।

২. বর্তমান ভিসির জন্য যে ১০ জন সিনিয়র ফ্যাকাল্টিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দিতে হয়েছিল তাদেরকে ফিরিয়ে আনতে হবে।

৩. সেমিস্টার ফি বাবদ যে অর্থ আদায় করা হচ্ছে তা কী খাতে ব্যয় হচ্ছে তা কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।

৪. ক্লিয়ারেন্সে টাকা দেয়ার নতুন নিয়ম বাতিল ও ক্যারি ক্লিয়ারেন্সে সর্বোচ্চ সিজিপিএ ৩ করতে হবে।

৫. ইউনিভার্সিটিতে অ‌্যালাইমনাই অ‌্যাসোসিয়েশন গঠনে সম্মতি দিতে হবে।

৬. সেমিস্টারে এস্টাব্লিস্টমেন্ট এবং ডেভেলপমেন্ট ফি নেয়া হলেও তার সকল সুবিধা দেওয়া হয় না, এ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। ল্যাব সুবিধা, ক্লাসরুম উন্নয়ন, ওয়াশরুম সংস্কার, নিরাপত্তার জোরদার, ক্যান্টিনের খাবার ও পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত, যাতায়াত ব্যবস্থা ও গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে।

৭. বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অরাজনৈতিক ছাত্রসংগঠন গঠনের অনুমতি দিতে হবে। যেখানে প্রতিনিধিত্ব করবে বর্তমান শিক্ষার্থীরা।

৮. নতুন করে একাডেমিক ক্যালেন্ডার বর্তমান সেমিস্টার রুটিনের আদলেই তৈরি করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।

৯. ক্যাম্পাসে সাংস্কৃতিক ও প্রগতিশীল কর্মকাণ্ড সহজ ও সাবলীল করার লক্ষ্যে র‌্যাগ ফেস্টসহ সব ধরনের সাংস্কৃতিক আয়োজন ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে হবে।