৮২৩ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করেছে শেভরন বাংলাদেশ

চলমান বাৎসরিক বৃত্তি প্রদান কর্মসূচির আওতায় অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে শেভরন বাংলাদেশ গতকাল এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সম্প্রতি (২৩ অক্টোবর) বিবিয়ানা গ্যাস প্লান্টে এর আয়োজন করা হয়।

জালালাবাদ, মৌলভীবাজার ও বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডের নিকটবর্তী ২৪টি স্কুলের ৮২৩ ছাত্রছাত্রীকে শেভরন এবছর বৃত্তি প্রদান করে। এদের মধ্যে প্রায় ৬৪ শতাংশ বালিকা। এ বছরের এসএসসি পরীক্ষায় উচ্চতর গ্রেডে উত্তীর্ণ ২০ জন ছাত্রছাত্রীও উক্ত বৃত্তির অন্তর্ভূক্ত ছিল। প্রায় দু-দশক আগে শেভরন বাংলাদেশ অল্পকিছু স্কুল নিয়ে বৃত্তি প্রদান কর্মসূচি চালু করে। শেভরন থেকে বৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীরা ২০১৯ সালের এসএসসি পরীক্ষায় গড়ে শতভাগের কাছাকাছি পাশ করে।

বাৎসরিক বৃত্তি প্রদান কর্মসূচি ছাড়াও শেভরনের ৩টি গ্যাস ফিল্ড এলাকায় আবস্থিত স্কুলের সামগ্রিক শিক্ষার পরিবেশ উন্নত করার জন্যে শেভরন মানসম্মত শিক্ষাকার্যক্রমকে সহায়তা দিয়ে থাকে। শিক্ষাবৃত্তি ছাড়াও স্কুলে অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ, কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন, কোচিং, এন্ডয়মেন্ট তহবিল, স্কুল ইউনিফর্ম, খেলার সামগ্রী, ফার্নিচার, স্বাস্থ্য সম্মত লেট্রিন ও সুপেয় পানি ইত্যাদি সহায়তা দিয়ে থাকে। শেভরনের এ সহায়তায় স্কুলের সামগ্রিক শিক্ষার পরিবেশ উন্নত হচ্ছে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত আমেরিকার রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শেভরন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট নিল মিনগাস, শেভরনের কর্পোরেট এ্যাফেয়ার্স বিভাগের পরিচালক ইসমাইল চৌধুরী, বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড সুপারিন্টেডেন্ট আশিক রহমান এবং শেভরনের সিনিয়র কর্মকর্তাবৃন্দ। আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রছাত্রী ও তাদের পিতামাতা ও অভিভাবকবৃন্দ।

আমেরিকার রাষ্ট্রদুত বলেন, “এখানকার উন্নয়নের মতো স্থানীয় মানুষের উন্নয়নে শেভরনের কর্মসূচি বাংলাদেশের উন্নয়নে অবদান রাখায় ইউএস সরকার গর্ব করে।” ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “তোমাদের মতো তরুণরাই পারে দেশকে ভবিষ্যতে নিয়ে যেতে।” পরিশেষে, তিনি বৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের অভিনন্দন জানান এবং তিনি তাদের নিজেদেরকে নিজেদের সাথে প্রতিদ্বান্দ্বতা করতে পরামর্শ দেন এবং ঝুঁকি নিতে বলেন যাতে তারা ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দেয়ার জন্যে মানুষের মতো মানুষ হতে পারে।

মিনগাস বলেন, “আমরা বিশ্বাসকরি আমাদের কর্মএলাকার স্কুল পড়–য়াদের সুপ্ত প্রতিভা লালন করার জন্যে শিক্ষা কার্যক্রম সহায়তা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষকরে গরীব ও পিছিয়ে পরা পরিবারের জন্যে, তাদেরকেই সহায়তা করা হচ্ছে যাতে তারা তাদের শেখার ক্ষমতা পরিপূর্ণ ব্যবহার করতে পারে।

২০০৫ সাল থেকে শেভরন তার গ্যাস ফিল্ড এলাকায় কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার আলোকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এজন্যে শেভরন ব্রাক এবং সুইসকন্টাক্টের সাথে অংশীদারিত্ব ভিত্তিতে যথাক্রমে এন্টারপ্রাইজ ডেভেলপমেন্ট এবং ভোকেশনাল ডেভেলপমেন্ট কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এসব কর্মসূচির মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন ও ক্ষুদ্রঋণ স্কিমের সাহয্যে ২০ হাজার মানুষকে সহায়তা করা হয়েছে এবং ১ হাজার ৪০০ স্থানীয় যুবক-যুবতীকে দক্ষতা প্রশিক্ষণ পেয়েছে যাতে তারা কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পারে। ইউএসঅইডির সাথে যৌথ উদ্দ্যোগে শেভরনের কর্মএলাকায় স্বাস্থ্য কর্মসূচির মাধ্যমে বছরে ১ লাখের অধিক স্বাস্থ্যসেবা সার্ভিস দেয়া হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে মিঃ চৌধুরীর বলেন, “কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে শেভরন মানব উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন কর্মসূচি নিয়ে থাকে যা আমাদের গ্লোবাল সামাজিক বিনিয়োগে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মসূচি হিসেবে প্রতিফলিত হয়ে থাকে।”