অবশেষে ডাকসুর অনুষ্ঠানে রাব্বানী

চাঁদাবাজি ও অসাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের কারণে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ হারানোর এক মাস পর ক্যাম্পাসে ডাকসুর অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন জিএস গোলাম রাব্বানী।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) পায়রা চত্বরে ডাকসুর উদ্যোগে বাইসাইকেল সেবা ‘জোবাইক’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান এবং ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুরের পাশে ছিলেন জিএস রাব্বানী।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন প্রকল্প থেকে চাঁদা দাবির অভিযোগ ওঠার পর গত ১৪ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে সরিয়ে দেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তাদের জায়গায় ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে আল নাহিয়ান খান জয় এবং ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন লেখক ভট্টাচার্য।

ছাত্রলীগ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর রাব্বানীকে ডাকসুর সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়ার দাবি ওঠে। এরপরে কার্যত লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যাওয়া রাব্বানী গত ২৬ সেপ্টেম্বর ডাকসুর কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকেও ছিলেন না। ওই বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত হয়।

ছাত্রলীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও অনুপস্থিত রাব্বানীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রথম দেখা যায় গত ২ অক্টোবর। ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ খোকনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে সংগঠনটির সাবেক নেতাদের সঙ্গে তিনিও এসেছিলেন।

এরপর আবার বিরতি দিয়ে গোলাম রাব্বানী ক্যাম্পাসে আসেন মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস উপলক্ষে একটি বাণীও আসে তার স্বাক্ষরে।

এরপর ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন তিনি। আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব রাব্বানীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পর তিনি ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক পদে থাকার ‘নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন’ বলে বক্তব্য দিয়েছিলেন ভিপি নূর। তবে এদিন পাশাপাশি বসা নুর-রাব্বানীকে হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় গল্প করতে দেখা গেছে।

সাইকেল সেবা
এই অনুষ্ঠানে ‘জোবাইক’ নামে মোবাইল অ্যাপভিত্তিক সাইকেল সেবার উদ্বোধন করেন ডাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। অনুষ্ঠানে এর নাম দেওয়া হয় ‘ডিইউ চক্কর’।

তিনি বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুন্দর, নিয়ন্ত্রিত ও সুব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জোবাইক পরিচালিত হবে। পরিবেশবান্ধব এই ব্যবস্থা যানজট নিরসনে ভূমিকা রাখবে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যে আসবে। হয়ে উঠবে বিজ্ঞানমনস্ক। প্রযুক্তিকে সময় অনুযায়ী ব্যবহারের অভ্যাস তৈরি হবে।”

অনুষ্ঠানের অতিথি হিসেবে শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিবহন সুবিধার জন্য জোবাইক সার্ভিস চালু হয়েছে। এটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ। জোবাইক একটি পরিবেশবান্ধব পরিবহন ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে ছাত্রাবস্থায়ই শিক্ষার্থীরা পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হতে পারবে।”

আওয়ামী লীগের এই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, “নেতা হওয়ার পরই ছাত্রদের কল্যাণের কথা ভাবতে হবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে। এজন্য সকলকে যার যার অবস্থান থেকে পরিবেশ সচেতনতা ও জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে।”