জেএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজে মোবাইল নিষিদ্ধ

আসন্ন জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে শিক্ষক, ছাত্র ও কর্মচারীদের মোবাইল, মোবাইল ফোনের সুবিধাসহ ঘড়ি, কলম এবং পরীক্ষা কেন্দ্রে ব্যবহারের অনুমতিবিহীন যে কোন ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে। সুষ্ঠু, নকলমুক্ত ও ইতিবাচক পরিবেশে সম্পন্নের লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় মনিটরিং ও আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটি এটি সহ ৯টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত সভায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, সুষ্ঠু, প্রশ্ন ফাঁসমুক্ত ও নকলমুক্তভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে সব রকমের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে আগামী ২৫ অক্টোবর থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সব রকমের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার আহবান জানান শিক্ষামন্ত্রী।

উল্লেখ্য, জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা আগামী ২ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে যথাক্রমে ১১ নভেম্বর ও ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। 

প্রশ্নফাঁস রুখতে মন্ত্রণালয়ের ৯টি সিদ্ধান্ত হলো-

১. পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট পূর্বে পরীক্ষার্থীদেরকে অবশ্যই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোন পরীক্ষার্থীকে এর পরে প্রবেশ করতে দিলে তার নাম, রোল নম্বর, প্রবেশেরর সময়, বিলম্ব হওয়ার কারণ ইত্যাদি একটি রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করে ওইদিনই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন দিতে হবে। একই পরীক্ষার্থী একাধিকবার বিলম্ব করলে তদন্ত করতে হবে।

২. কেন্দ্র সচিব ব্যতীত পরীক্ষা কেন্দ্রে অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা অননুমোদিত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না। কেন্দ্র সচিব ছবি তোলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাবিহীন একটি সাধারণ (ফিচার) ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। অননুমোদিত ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারীগণের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৩. পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে শিক্ষক, ছাত্র ও কর্মচারীদের মোবাইল, মোবাইল ফোনের সুবিধাসহ ঘড়ি, কলম এবং পরীক্ষা কেন্দ্রে ব্যবহারের অনুমতিবিহীন যে কোন ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে, নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৪. জেলার ক্ষেত্রে ট্রেজারি এবং উপজেলার ক্ষেত্রে উপজেলাস্থ থানা লকারে প্রশ্নপত্রের ট্রাংক সংরক্ষণ করতে হবে।

৫. ট্রেজারিতে রক্ষিত প্রশ্নপত্র পরীক্ষা শুরুর তিন দিন পূর্বে দিনভিত্তিক ও সেট ভিত্তিক সর্টিং করে সিকিউরিটি খামে সংরক্ষণ করতে হবে।

৬. প্রত্যেক কেন্দ্রের জন্য একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট/কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার) নিয়োগ দিতে হবে। তিনি ট্রেজারী, থানা হেফাজত হতে কেন্দ্র সচিবসহ প্রশ্ন বের করে পুলিশ প্রহরায় বোর্ড কর্তৃক সরবরাহকৃত সকল সেটের প্রশ্ন কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন।

৭. পরীক্ষা শুরু হওয়ার ২৫ মিনিট পূর্বে প্রশ্নের সেট কোড ঘোষণা করা হবে। সে অনুযায়ী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট/দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার উপস্থিতিতে তাঁর কেন্দ্র সচিব ও পুলিশ কর্মকর্তার স্বাক্ষরে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট বিধি অনুযায়ী খুলতে হবে।

৮. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত গুজব কিংবা এ কাজে তৎপর চক্রগুলোর কার্যক্রমের বিষয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহ নজরদারি জোরদার করবে।

৯. প্রশ্নপত্র ফাঁস কিংবা পরীক্ষার্থীদের নিকট উত্তর সরবরাহে জড়িত ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও জেলা প্রশাসন কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।