নুর ও কোটা সংস্কার নিয়ে রাব্বানীর ব্যঙ্গাত্মক গল্প

বুয়েট ছাত্র ফাহাদ আবরার নিহত হওয়ার পর থেকেই ছাত্ররাজনীতিতে অস্থিরতা চলছে। বিষয়টিতে ছাত্রলীগের জড়িত থাকা না থাকা নিয়ে ক’দিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা আলোচনা-সমালোচনাও চলছে। চাঁদাবাজি ও নৈতিকতার স্খলনসহ বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ছাত্রলীগ থেকে পদ হারানো সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী সার্বিক বিষয় নিয়ে তিনি একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন। যা হুবহু তুলে ধরা হলো-

ধরুন, ‘গোটা সংস্কার আন্দোলন’ নামক তথাকথিত নিরপেক্ষ প্লাটফর্ম, যার সদস্যগণ সকল অসংগতি, অন্যায়, অনাচারের বিরুদ্ধে সদা সোচ্চার। এখন, জনৈক নূরাহম্বক মিয়া উক্ত সংগঠনে যোগদান পূর্বক সকল কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণ করিয়া একটি পদ বাগাইয়া লইলেন। একদা ব্যক্তিগত বদখাসলত আর রিপুর তাড়নায় পড়িয়া রাস্তায় জনৈক রমনীকে ইভ টিজিং করিয়া বসিলেন। অতঃপর, পাবলিক গণধোলাই দিয়া পুলিশে সোপর্দ করিলো।

এরপর যদি সকল গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হয়, ‘ইভটিজিং করে গণধোলাই খাইলেন গোটা সংস্কার আন্দোলনের অমুক।’ অথবা, বড় করে হেডলাইন হলো, ইভটিজারের সংগঠন গোটা সংস্কার আন্দোলন'/ ইভটিজারের আখড়া গোটা সংস্কার আন্দোলন!

এহেন অপকর্মের দায়ে যদি নূরাহম্বক মিয়াকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়, তার শাস্তি নিশ্চিত করতে নিজ সংগঠনের সদস্যরাই আওয়াজ তোলে, দলের পক্ষ থেকে এহেন অন্যায়কে নূন্যতম প্রশ্রয় দেয়া না হয় তবে ব্যক্তি নূরাহম্বকের অপকর্মের দায় পুরো সংগঠনের উপর কতটুকু বর্তায়? কেন একজন নূরাহম্বকের জন্য হাজারো ‘গোটা সংস্কার আন্দোলন’ কর্মী ইভিটিজার আখ্যা পাবে, মানুষের গালী খাবে?

ইভটিজিংকে বিন্দুমাত্র সমর্থন না দেয়া সংগঠনটির বিরোধী গোষ্ঠী যদি সব জেনে বুঝেও একজন নূরাহম্বকের অপকর্মকে পুঁজি করে রাজনৈতিক স্বার্থে যদি স্লোগান ধরে, ‘‘ইভটিজারের পাহাড়াদার, গোটা আন্দোলন বাংলা ছাড়!’’, তাহলে বুঝতে হবে, উহাদের চুলকানির সাবজেক্ট ম্যাটার, ইভটিজিং বা নূরাহম্বক নয়, স্বয়ং গোটা সংস্কার আন্দোলন!

এদিকে রাব্বানীর ওই স্ট্যাটাসে অন্যান্যের সঙ্গে কমেন্টস করেছেন নুরও। যাতে সহানুভূতি পাওয়ার জন্য গোলাম রাব্বানী এমন স্ট্যাটাস দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।

এর আগে ৭ অক্টোবর বুয়েট ইস্যু টেনে আরেকটি স্ট্যাটাসে রাব্বানী লিখেন, ‘দায়টা কোনভাবেই সংগঠনের নয়, সংগঠন তো শিক্ষা-শান্তি-প্রগতির মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হবার দীক্ষা দেয়; সত্য, সুন্দর, ইতিবাচকতা আর মানবিকতার জয়গান গাইতে শেখায়।

দায়টা ব্যক্তি বিশেষের। তবে পরিতাপের বিষয়, এক মন দুধে কয়েক ফোটা গো-মূত্রের ন্যায় গুটিকয়েক বিপথগামী, প্রতিক্রিয়াশীলদের অপকর্মের দায়ভার পুরো সংগঠনের উপরই বর্তায়। ঘটনা যাই হোক, আইনের ছাত্র হিসেবে এটুকু বুঝি, মার্ডার ক্যান নট বি জাস্টিফাইড বাই এনি মিনস!

অপরাধীর একটাই পরিচয়, সে অপরাধী! সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আবরারের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।’