ফায়ার সার্ভিসের ৫ কর্মীর সাথে এ কেমন আচরণ!

নেত্রকোনায় ফায়ার সার্ভিসের সাপ্তাহিক পাম্পড্রিলে ১০ জন ফায়ারম্যান অংশ নেন। তিনতলায় অগ্নিকাণ্ড ঘটলে কীভাবে তা তিন মিনিটের মধ্যেই নেভানো যায়, পাম্পড্রিলে তা করে দেখাতে বলা হয়। নির্দেশমতে, ১২ কেজি ওজনের পাম্পসহ অন্য যন্ত্রপাতি উপরে তুলে ওই প্রশিক্ষণের কাজ নির্ধারিত সময়ে করা যায়নি। এরপর ইনচার্জ আবারও একই কাজ করার নির্দেশ করেন। এতেও সময় বেশি লাগে।

এসময় শারীরিক দুরবস্থার কথা জানানোর পরেও বারবার ভারী পাম্পড্রিল নিয়ে তিনতলায় উঠানো হচ্ছিল ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের। একপর্যায়ে বমি করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ার আগে ‘মরে যাচ্ছি’ বলে চিৎকার করলেও এক ফোঁটা পানি দেওয়া হয়নি কাউকে!

রোববার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা এভাবেই অভিযোগ করেন তাদের স্টেশন ইনচার্জ মো. মোশারফ হোসেনের বিরুদ্ধে। জানা যায়, এদিন সকাল থেকে পাম্পড্রিল শুরু হয়। পরে, দুপুরের দিকে মাত্রাতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেকে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ফায়ারম্যানরা হলেন মোহাম্মদ আল আমিন, মো. অপু মিয়া, নুর মোহাম্মদ, কবির আহমেদ ও মোহাম্মদ হানিফ।

তারা বলেন, আমরা হাঁপিয়ে উঠে ঠিকমতো নিঃশ্বাসও নিতে পারছিলাম না জানানোর পরেও আবার পাম্পড্রিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। বারবার পানি পানি বলে চিৎকার করছিলাম। কিন্তু, এক ফোঁটা পানি দেওয়া হয়নি। বরং, তখন ইনচার্জ আমাদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করেন। পরে আমরা বমি করি ও অচেতন হয়ে পড়ি।

এই ফায়ারম্যানদের অভিযোগ, ইনচার্জ মোশারফ তাদের সঙ্গে সবসময় অকারণে গালমন্দ ও দুর্ব্যবহার করেন সবকিছুতেই। তবে, ইনচার্জ লিডার মো. মোশারফ হোসেন তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কী কারণে ফায়ারম্যানরা একসঙ্গে অসুস্থ হলেন, তিনি তা বুঝতে পারেননি।

কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আশেক উল্লাহ খান বলেন, মাত্রাতিরিক্ত পরিশ্রম ও গরমের কারণে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ সদস্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুইজনকে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।