মোরশেদা বেগম ও নৃত্য নিকেতন পেল ইউনেস্কোর স্বীকৃতি

ইউনেসকোর আন্তর্জাতিক ড্যান্স কাউন্সিলের সদস্য হয়েছেন নওগাঁর নৃত্যশিল্পী ও নির্দেশক মোরশেদা বেগম। তিনি শিল্পী নামে সমধিক পরিচিত। মোরশেদার নাচের প্রতিষ্ঠান নৃত্য নিকেতনও একই মর্যাদা পেয়েছে ।

এ স্বীকৃতির ফলে ইউনেসকোর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারবেন মোরশেদা ও তাঁর দল। দেশে আন্তর্জাতিক মানের যেকোনো নৃত্যানুষ্ঠান আয়োজনেও সহায়তা করবে ইউনেসকো। ইতিমধ্যে তারা ন্যাশনাল ড্যান্স কাউন্সিল থেকে আনুষ্ঠানিক চিঠি পেয়েছে। এছাড়া জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল ড্যান্স কাউন্সিলের সাধারণ সভায় যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছেন মোরশেদা এবং তাঁর দল। আগামী ৪ ডিসেম্বর ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিত হবে ২৩তম সভা।

১৯৭৮ সালে জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় নৃত্যে রাষ্ট্রপতি পদক পান মোরশেদা বেগম। নৃত্য নিকেতন জাতীয় মৌসুমি প্রতিযোগিতায় আঞ্চলিক নৃত্য বিভাগে পরপর সাতবার বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম স্থান অধিকার, জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদকসহ ‘বাংলাদেশ নৃত্য শিল্পী সংস্থা’ আয়োজিত নৃত্য প্রতিযোগিতায় নৃত্য নিকেতন লোকনৃত্য (দলীয়) প্রথম হয়।

মোরশেদা বেগম নওগাঁ ডিসি অফিসে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। মোরশেদা বেগম জানান, শিল্পকলা একাডেমির মাধ্যমে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন। কিন্তু এখনো কোনো সাড়া মেলেনি। এ সভায় অংশ নেওয়ার জন্য শুধু সেখানকার থাকা, খাওয়া এবং স্থানীয় যোগাযোগের ব্যবস্থা করা হবে ইন্টারন্যাশনাল ড্যান্স কাউন্সিল থেকে। কিন্তু দলের বেশির ভাগ সদস্যের পাসপোর্ট নেই। ফ্রান্সে যাওয়া–আসা করার সংগতি নেই।

ইউনেসকোর স্বীকৃতি সম্পর্কে মোরশেদা বেগম বললেন, ‘আমরা কোনো যোগাযোগ করিনি কিংবা আবেদন ছিল না। আগস্ট মাসের ৭ তারিখে ইউনেসকোর ইন্টারন্যাশনাল ড্যান্স কাউন্সিলের পক্ষে কাউন্সিলের প্রেসিডেন্টের অ্যালকিস রাফটিস সরাসরি যোগাযোগ করেন।

সে সময় তিনিজানতে চান, ‘আমাদের যদি বিদেশে নাচ পরিবেশনের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়, তাহলে আমরা যাব কি না?’ আমরা যেতে রাজি হলে, তিনি আমাদের সংগঠনের এবং আমার বিস্তারিত তথ্য জানতে চান। সেসব পাঠানোর পর তাঁরা ফোনে যোগাযোগ করেন।

গত ৩০ আগস্ট সন্ধ্যা সাতটায় তাঁরা আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানান, ‘আমি এবং নৃত্য নিকেতনকে এই আন্তর্জাতিক ড্যান্স কাউন্সিলের সদস্য করা হয়েছে।’

বাংলাদেশের আরও দুজন এ সদস্য পদ লাভ করেছেন, তাঁরা হলেন ঢাকার তুরঙ্গমী স্কুল অব ড্যান্স এর পূজা সেনগুপ্তা ও নৃত্যশিল্পী শর্মিষ্ঠা সোনালিকা সরকার। ১৯৯৭ সালে মোরশেদা বেগম নৃত্য নিকেতন প্রতিষ্ঠা করেন। পরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাছাই করা ছেলেমেয়েদের নিয়ে নাচের দল চালু করেন।