ঢাবিকে বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে ১০০ তে আনার প্রত্যাশা

বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন’। প্রাক্তন ও বর্তমান অ্যালামনাইদের মিলনমেলা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় দিনটি উদযাপন করেছে সংগঠনটি।

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) প্রতিষ্ঠার ৭১ তম বছরটি উদযাপন করেন অ্যালামনাইরা।

শনিবার বিকেলে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। পরে কেক কাটেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। এরপর সন্ধ্যায় আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। শেষে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপস্থাপন করেন নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, এমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন, ডাকসুর সাবেক জিএস ডা মোশতাক হোসেন, অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব রকীবউদ্দীন, অ্যলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি একে আজাদ, মহাসচিব রঞ্জন কর্মকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, 'দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অ্যালামনাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন। অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের দীর্ঘ পথচলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে যেভাবে কাজ করে চলেছে আগামীতেও তা অব্যাহত থাকবে।'

ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্র ভেঙেছি কিন্তু রাষ্ট্রের পিতৃতান্ত্রিক চরিত্র বদলাতে পারিনি। বদলের জন্য প্রয়োজন জ্ঞানের চর্চা। জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে আমরা ব্যক্তিগতভাবে সমৃদ্ধ হব। এই পরিবর্তন আমাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি হবে না। হবে সমষ্টিগত। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের নিপীড়নগত চরিত্র বদলে দেব। অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের ওপরই এই দায়িত্ব বর্তায়। কেননা তারাই সমাজের অগ্রসর মানুষ।’

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপনকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণটাকে একটা গ্রন্থ প্রাঙ্গণ হিসেবে গড়ে তোলা ও সংগ্রামের ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য একটা মুক্তি-সংগ্রাম সংরক্ষণশালা গড়ে তোলার প্রস্তাব করেন তিনি।

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী আগামী ১০ বছরের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বৈশ্বিক র‌্যাংকিংয়ে একশ’র মধ্যে নিয়ে আশার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং শিক্ষকদের পাঠদান ও গবেষণার প্রতি গুরুত্বারোপের প্রতি জোর দেন তিনি৷ এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মেধা বিকশিত করতে শিক্ষকদের অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষার্থী।

এসময় তিনি গবেষণায় সহায়তায় অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে একটা টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব করেন।

অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি একে আজাদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাইয়ের তুলনায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পিছিয়ে রয়েছে। তবুও আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তন সংস্কার, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান, লাইব্রেরী সংস্কারে উদ্যোগ নিয়েছি। আগামীতে র‌্যাংকিংয়ে উন্নতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে উদ্যোগ নিবো আমরা।’