বাবা-মা তুলে ভিসির গালিগালাজ, আলোচনায় নতুন অডিও

এবার নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ‘জানোয়ার’ বলে গালাগালি  এবং শিক্ষার্থীদের বাবা-মা নিয়ে অরূচিপূর্ণ মন্তব্যে অডিও ক্লিপ সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্য খোন্দকার নাসিরউদ্দিন। 

গত ৫ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শ্রেণিকক্ষের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে স্ট্যাটাস ও কমেন্ট করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। বহিষ্কৃতরা ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

পরে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের পক্ষে ক্ষমা চাইতে তাদের সহপাঠিরা গিয়েছিলেন উপাচার্য খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের অফিসে। তখন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় তাদেরকে ‘জানোয়ার’ বলে ধমকি দেন উপাচার্য। ওই দিনের একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অডিও ক্লিপে উপাচার্যকে বলতে শুনা যায়, ‘‘এই জানোয়ার তোর বাপ বিশ্ববিদ্যালয় চালায়? জানোয়ারের দল। লাথি দিয়া বের করে দিতে ইচ্ছে করে। তোর বাপেরে চালাইতে ক। দেখি কি চালায় তোর আব্বা। তোরা জানোয়ারের দল। কোনডারে ছাড়বো। এক্টার চেয়ে আরেকটা বেশি। তোরা চালা তাইলে বিশ্ববিদ্যালয়।’’

ক্ষমা চাইতে যাওয়াদের মধ্যে একজন বলেন, ‘‘ডিপার্টমেন্টের সবাই গিয়েছিলাম ৬ জনের জন্য সুপারিশ করতে। কিন্তু ভিসি শুধু ওদের ৬ জনকেই না পুরো ডিপার্টমেন্টর সবাইকেই ধুয়ে দিলো। ‘জানোয়ারের বাচ্চারা, ক্লাস রুম দিয়ে তোদের শ্রাদ্ধ দিবো, তোদের মতো কুলাঙ্গার জন্ম দিয়ে তোদের বাপ মহা অন্যায় করছে, তোর কোন বাপরে আনবি নিয়ে আয়, তিন দিনের বাচ্চুর নেতা হইতে আইছিস!’ শেষে তিনি বলেছেন, ‘বের হয়ে যা আমার চোক্ষের সামনে থেকে জানোয়ারের বাচ্চারা।’ শুধু এই নয়, সবার অভিভাবককে ডেকে এনে তাদের সামনেও ভিসির এসব বকাবকি।

অবশ্য পরবর্তীতে ৩ জনের বহিষ্কার উঠালেও বাকি ৩ জনেরটা এখনও উঠানো হয়নি। এখনও ভুলিলি কথাগুলো। কথাগুলো শুনার পর নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ভাবতেই ঘৃণা হচ্ছিলো তখন। এমন একজন অসামাজিক আবাল একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কিভাবে হয় তা আমার বোধগম্য হয় না।’’

এ সংক্রান্ত চারটি অডিও দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের হাতে এসেছে। আরেকটি অডিওতেও ভিসিকে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি তাদের বাবা-মা উভয়কে নিয়ে নানা কথা বলেন।

প্রসঙ্গত, বহিষ্কার আদেশের চিঠিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী হাবিবুল্লাহ নিয়ন তাদের বিভাগের ১০৩নং ক্লাস রুমের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে ফেসবুকে লেখালেখি করে। এ লেখালেখিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে।  যা শৃঙ্খলা পরিপন্থী ও গর্হিত কাজ।

অথচ বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা এর কিছুদিন আগে  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি রোবটিক্স প্রতিযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছিল।

বিষয়টি জানতে উপাচার্য খোন্দকার নাসিরউদ্দিন একের অধিকবার ফোন দেয়া হলেও হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।