ঢাবিতে জালিয়াত বিরোধী কর্মসূচীতে ‘মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চে’র হামলা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ছাত্রলীগের হামলার পরে এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পসে ‌‍‍‍দুর্নীতি ও জালিয়াত বিরোধী কর্মসূচীতে হামলা চালালো মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। মঞ্চের আহ্বায়কের সামনে শিক্ষার্থীদের মারধর এবং এক ছাত্রীকে হেনস্তা করে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

শুক্রবার (১৫ সেপ্টম্বর) বিকেল চারটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

হামলায় প্রগতি বর্মন তমা, সালমান সিদ্দিকী, সাদিকুর রহমান, রাগিব নাইম, আতিক চৌধুরী আহত হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল হামলায় অংশ নেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ‍দুর্নীতি ও জালিয়াতির বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়" ব্যানারে সংহতি সমাবেশ শুরু করতে গেলে পূর্বেই মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের ব্যানারে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নেয়। পরে সেখানে গেলে শিক্ষার্থীদের গালমন্দ করে তারা। এক পর্যায়ে বিনা উস্কানীতে আগ্রাসী হয় মঞ্চের নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে প্রগতি বর্মন তমাকে ধাক্কা মেরে রাজু ভাস্কর্যের নিচে রাস্তায় ফেলে দেয় হামলাকারীরা। পরে সালমানসহ অন্যদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতারা। হামলার পুরো সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের আহ্বায়ক আ ক ম জামাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রগতি বর্মন তমা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে দুর্নীতি ও জালিয়াত বিরোধী সংহিতি সামবেশ করতে রাজু ভাস্কর্যে যাই। পরে সেখানে দেখি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের ব্যানারে সাবেক-বর্তমান ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতা শামসুজ্জামান দুদুর বক্তব্যের প্রতিবাদে কর্মসূচী করছে। আমরা সেখানে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা বক্তব্য শেষ করে। পরে আমরা রাজুর সামনে গেলে তারা বিনা উস্কানীতেই বলে তোরা এখানে প্রেগ্রাম করতে এসেছিস আমাদের এগুলো (কুশপুত্তলিকা) সরাতে পারবি না। তারা বলে  আমাদের বাবা মুক্তিযুদ্ধ করেছে তোরা করেছিস। তোরাতো আসিস শুধু মিডিয়া ফোকাসে আসার জন্য।

তমা বলেন, বুলবুল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা চোখের সামনে হাত নাড়িয়ে কথা বলতে ছিল। পরে যখন বলা হলো আপনি এভাবে হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে উত্তেজিত হয়ে কথা বলছেন কেন? এ কথার পরেই আমাদের লোকজনের ওপর হামলে পরে তারা। একজন এসে আমাকে ধাক্কা মেরে নিচে ফেলে দেয়া হয়। এ ঘটনায় সালমান, সাদিকুর, রাগিব, আতিক আহত হয়। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

তবে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেন মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তিনি বলেন, তাদের সাথে আমাদের কোনো হামলার ঘটনা হয়নি। তাদের নিজেদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে।

এদিকে, হামলা প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল বের করেন দুর্নীতি বিরোধী শিক্ষার্থীরা। রাজু ভাস্কর্য  থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনের ‘নুর চত্ত্বর’ এসে শেষ হয়।

প্রসঙ্গত, ৩৪ ছাত্রলীগ নেতাকে চিরকুটের মাধ্যমে অবৈধভাবে ভর্তির প্রতিবাদে দিন দাবিতে ক্যাম্পাসে আন্দোলন করছে দুর্নীতি ও জালিয়াত বিরোধী শিক্ষার্থীরা। বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিবেশ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, স্বতন্ত্র জোটের শিক্ষার্থীরা দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেন।