বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে চীনে ফুল ফ্রী স্কলারশীপ লাভ

তানভীরুল ইসলাম। নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর থানার উত্তর চরক্লার্ক গ্রামের এক মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবাবরের সন্তান। ছোট্ট পরিবাবরের আদর, স্নেহ, মায়ামমতা, আর ভালেবাসায় বেড়ে ওঠা। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট।

তানভীরের পড়া লেখার হাতেখড়ি গ্রামের একটি প্রাথমিক স্কুলে। সেখান থেকে সে ট্যালেন্টপুল বৃত্তি পেয়ে উত্তীর্ণ হন। তারপর তিনি সেখান থেকে ঢাকায় চলে আসেন এবং ঢাকার মীরপুরের একটি মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেনীতে ভর্তি হন। সেখানেও রাখেন কৃতিত্বের স্বাক্ষর, এরপর ভর্তি হন ঢাকার মীরহাজীরবাগে অবস্থিত তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসায়। সেখানেও তিনি ধারাবাহিকভাবে মেধার স্বাক্ষর রেখে উচ্চমাধ্যমিকে অর্জন করেন জিপিএ-৫।

তানভীরের ইচ্ছা ছিল সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করবে, কিন্ত নিয়তির কাছে যে তাকে হারতে হয়েছে। তানভীরের বড় ভাই অধ্যাপনা করেন চট্রগ্রামের একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং তার পরামর্শেই একসময় তিনি সব কিছুকে মারিয়ে ভর্তি হন চট্রগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকোনমিক্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগে। বাবা-মা,ভাই বোনের প্রিয় তানভীরুল এক সময় প্রিয় হয়ে ওঠেন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও বন্ধু মহলে। নিয়মিত ক্লাস, টিওটোরিয়াল, এ্যাসাইনমেন্ট আর অর্থনীতির সব মৌলিক প্রশ্নের ভীরে হারিয়ে ফেলেন নিজেকে।

ভুলে যান ঢাবিতে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন। সে সবকিছু ভুলে পড়াশুনায় মনোযোগী হন এবং চিন্তা করতে থাকেন কিভাবে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাল রেজাল্ট করা যায়। ফলশ্রুতিতে তিনি একাধারে সাফল্য পেয়ে গিয়েছেন, বরাবর প্রমাণ করেছেন যে তিনিই সেরা। তিনি প্রথম সেমিস্টার থেকে অষ্টম সেমিস্টার পর্যন্ত কৃতিত্বের সাথে আউট অফ ফোর সহ গড়ে ৩.৮১ পেয়ে মেধার স্বাক্ষর রাখেন।

তার ধারাবাহিক সাফল্যের গল্প শুনতে চাইলে তিনি বলেন- নিয়মিত ক্লাস, শিক্ষকদের লেকচার অনুসরণ করা আর নিজের মত করে নোট করার অভ্যাস গড়ে তুলেছিলেন এবং নিয়মিত ৪-৫ ঘন্টা বইয়ের সাথে সম্পর্ক রাখতেন।

তানভীর শুধু দেশেই নয় বরং দেশের বাহিরেও ভাল করার স্বপ্ন দেখেন। তার সাফল্যের ধারাবাহিকতায় তিনি গত আগস্ট মাসে চীনের বেইজিং নর্মাল ইউনিভার্সিটির মাস্টার্স ফল ২০১৯ সেমিস্টারে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক্স এর উপর চীন সরকারের ফুল ফ্রি স্কলারশিপ পান।

তিনি মনে করেন তার পথচলার এখনও অনেক বাকি। রক্তচক্ষু কে ভয় না পেয়ে তার জবাব কাজের মধ্য দিয়ে দেয়াই হলো সাফল্য। ভবিষৎ এ নিজেকে অনেক বেশি যোগ্য করার মধ্য দিয়ে দেশ ও জাতীর সেবা করার প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন তানভীর।