নতুন নিয়মে ভর্তি পরীক্ষা, সন্তুষ্ট ঢাবি উপাচার্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত গ ইউনিটের অধীনে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এখন পর্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো কিছু ঘটেনি বলে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে নতুন নিয়মে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বহু নির্বাচনী প্রশ্নের (এমসিকিউ) পাশাপাশি দিতে হয়েছে লিখিত পরীক্ষাও। এত দিন শুধু এমসিকিউয়ের মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া হতো।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের দুটি পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের কাছে এই দাবি করেন উপাচার্য।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভেতরে ৫৪টি কেন্দ্র এবং লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের একটি ও বুয়েট ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলের একটি কেন্দ্রসহ মোট ৫৬ টি কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত পরীক্ষা চলে।

সকাল সোয়া ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের দুটি পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য। এসময় কেন্দ্র দুটির কয়েকজন পরীক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পরিদর্শন শেষে উপাচার্য জানান, নতুন নিয়মে পরীক্ষা দিতে পেরে পরীক্ষার্থীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছে।

পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যম কর্মীদের উপাচার্য বলেন, ‘এ বছর মোট ৫৬টি কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষা চলছে। আমাদের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং শিক্ষকরা পরিদর্শন করছেন। এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটেনি। এবার নতুন নিয়মে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে পরীক্ষার্থীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছে।'

এসময়, প্রশ্নফাঁসকারী ও জালিয়াতি চক্রের ফাঁদে পা না দিতে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান উপাচার্য।

এর আগে ঢাবি কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয়, ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে নতুন নিয়মে ৬০ নম্বরের এমসিকিউ ও ৪০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি করা হবে। এমসিকিউ ৪০ মিনিট এবং লিখিত পরীক্ষার জন্য ৫০ মিনিট সময় বরাদ্ধ। সংক্ষিপ্ত আকারের লিখিত প্রশ্ন উত্তরপত্রের মধ্যেই থাকবে এবং সেখানেই উত্তর দিতে হবে। দুই অংশ মিলিয়ে ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষার ফল এবং এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের ফলকে ১০০ নম্বর হিসাব করে মোট ২০০ নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে।

এ বছর ‘গ’ ইউনিটে ১২৫০টি আসনের বিপরীতে আবেদনকারীর ২৯,০৫৮জন ভর্তিচ্ছু পরীক্ষা দিচ্ছেন। পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন বা টেলিযোগাযোগ করা যায় এরূপ কোন ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস/যন্ত্র বহন করতে দেওয়া হয়নি।

ক্যাম্পাসের বিভিন্ন কেন্দ্রে ঘুরে দেখা যায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া, পরীক্ষা চলাকালে ভ্রাম্যমান আদালত দায়িত্ব পালন করবে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, ছাত্রলীগ ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া বিভিন্ন জেলার শিক্ষার্থীদের জেলা সংগঠন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের তথ্য সহায়তা দিয়েছে। এছাড়া, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের বিশ্রামের জন্য চেয়ার ও খাবার পানির ব্যবস্থা করেছে।

কিন্তু সকাল থেকে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হওয়ায় পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস কাদায় সয়লাব হয়ে গেছে। এছাড়া, বহিরাগত যান নিয়ন্ত্রণ না করায় ক্যাম্পাসে মানুষ ও গাড়ির ভিড়ে তিল ঠাই অবস্থা বিদ্যমান।

প্রসঙ্গত, চারুকলা অনুষদভুক্ত ‘চ’-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা (সাধারণ জ্ঞান) আগামী শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদসহ ক্যাম্পাসের মোট ১৯টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর চ ইউনিটে ১৩৫টি আসনের বিপরীতে আবেদনকারীর ১৬ হাজার ১জন ভর্তিচ্ছু পরীক্ষা দেবে।

এছাড়া, বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২০ সেপ্টেম্বর, কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২১ সেপ্টেম্বর, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৭ সেপ্টেম্বর, চারুকলা অনুষদভুক্ত ‘চ’ ইউনিটের সাধারণ জ্ঞান পরীক্ষা ১৪ সেপ্টেম্বর ও অঙ্কন পরীক্ষা ২৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।