ফেসবুকে স্ট্যাটাস: ফের শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করল বশেমুরবিপ্রবি

সুনির্দিষ্ট কোন কারণ উল্লেখ ছাড়াই গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী ফাতেমা তুজ জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।

বুধবার বশেমুরবিপ্রব‘র রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. নূরউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তার সাময়িক বহিষ্কার আদেশ জানানো হয়। একইসঙ্গে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীর কোন বক্তব্য থাকলে তা লিখিত আকারে জানাতে বলা হয়। 

রেজিস্ট্রার বহিষ্কারের কারণ প্রসঙ্গে চিঠিতে বলেন, অতি সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রের সাথে প্রশাসন এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে আপত্তিকর লেখালেখি করেছেন। এছাড়া ভাইস চ্যান্সেলর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ফেসবুক আইডি হ্যাক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি করার হুমকি প্রদান করেছেন। বিষয়টি শিক্ষার্থীদের জন্য প্রণীত আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সুতরাং উপরােক্ত বিষয় বিবেচনায় এনে আপনাকে সাময়িক একাডেমিক বহিষ্কার করা হলাে।’

এ বিষয়ে ফাতেমা-তুজ-জিনিয়া বলেন, ‘আমি কখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে কারও সাথে কোন ধরনের লেখালেখি করিনি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ অসত্য।’

তবে আপত্তিকর কি লেখা হয়েছে অথবা উপাচার্যের ফেইসবুক আইডির হুমকি কোথায় কাকে দেয়া হয়েছে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়নি। এভাবে কোন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা যায় কি না জানতে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস কথা বলেন রেজিস্ট্রারের সঙ্গে। তিনিও বিষয়টি স্পষ্ট করে বলতে পারেন নি। তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এইরূপ একটি নোটিশ প্রদানের জন্য আমাকে বলেছেন, তাই আমি করেছি।”

শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে আপত্তিকর কি স্ট্যাটাস বা হুমকি দিয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে কোন প্রমাণ বা ডকুমেন্ট নেই। তবে যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলেছেন, তাদের কাছে থাকতে পারে।”

এভাবে খামখিয়ালিভাবে একজন শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিককে বহিষ্কার করে তার শিক্ষা জীবন হুমকির মুখে ফেলা এবং শিক্ষার্থীদের মত প্রকাশে বাঁধা দেয়ার কারণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ও শৃংখলা কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন উপাচার্য প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন। তবে মোবাইলে একাধিকবার চেষ্টা করলেও তিনি রিসিভ করেননি।   

এর আগে বিগত ছয়মাসে ২১ জন শিক্ষার্থীকে শোকজ নোটিশ প্রদান করা হয়েছে এবং বহিষ্কার করা হয়েছে ৭ জনকে। শোকজ নোটিশপ্রাপ্ত ২১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ছয়জনকে ফেসবুক স্টাটাসের জন্য নোটিশ প্রদান করা হয়। এসকল শিক্ষার্থীরা দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষক আক্কাছ আলীকে নিয়ে ফেসবুকে স্টাটাস প্রদান করেছিলেন এবং বাকি ১৪ জনকে ধানের ন্যায্যমূল্য চেয়ে মানববন্ধন করায় নোটিশ প্রদান করা হয়।

এছাড়া, এসময়ে এই ২১ জন শিক্ষার্থী ব্যতিত ৭ জন শিক্ষার্থীকে ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়। এদের মধ্যে ছয়জন শ্রেণীকক্ষের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে এবং একজন আক্কাস আলীকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন।