বিদেশি শিক্ষার্থীদের নিয়ম শিথিল করেছে যুক্তরাজ্য

বিদেশি শিক্ষার্থী আকর্ষণে আবারও নিয়ম শিথিল করেছে যুক্তরাজ্য। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, পড়াশোনা শেষে দুই বছর যুক্তরাজ্যে অবস্থান করতে পারবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁদের কর্মসংস্থানের ওপরও বিধিনিষেধ থাকবে না। অর্থাৎ যেকোনো ধরনের চাকরি বা ব্যবসায় যুক্ত হতে পারবেন তাঁরা।

বুধবার দেশটির অভিবাসন বিভাগ এই নতুন নিয়ম ঘোষণা করে। স্নাতক বা স্নাতকোত্তর কোর্স সম্পন্নকারী বিদেশি শিক্ষার্থীরা এ সুযোগ পাবেন। ২০২০ সালের শুরু থেকে এ নিয়ম কার্যকর হবে। দুই বছরের কাজের সুযোগ নিতে হলে অভিবাসনের নিয়মকানুন যথাযথভাবে মেনে চলে, এমন প্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়াশোনা করতে হবে।

গত বছর প্রায় সাড়ে ৪ লাখ বিদেশি শিক্ষার্থী যুক্তরাজ্যে আসেন। নতুন নিয়মের পর এই সংখ্যা বেশ বাড়বে বলে ধারণা। বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রদানে কোনো সীমা (কোটা) থাকবে না।

আগেও যুক্তরাজ্যে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য এমন সুযোগ ছিল। ‘পোস্ট স্টাডি ওয়ার্ক পারমিট’ (পিএসডব্লিউ) নামে পরিচিত ছিল সেটি। ২০১২ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেরেসা মে অভিবাসন কমানোর কৌশল হিসেবে সেটি বন্ধ করে দেন। এর ফলে সেই থেকে পড়াশোনা শেষে চার মাসের মধ্যে বিদেশি শিক্ষার্থীদের যুক্তরাজ্য ছাড়তে হচ্ছে। সরকারের নতুন ঘোষণার মধ্য দিয়ে থেরেসা মে-র বিদ্বেষমূলক অভিবাসননীতির অবসান ঘটল।

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এই পরিবর্তনের ফলে বিদেশি শিক্ষার্থীরা নিজেদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর সুযোগ পাবেন এবং যুক্তরাজ্যে নিজেদের কর্মজীবন শুরু করতে পারবেন। আর অর্থমন্ত্রী (চ্যান্সেলর) সাজিদ জাভিদ বলেন, বহু আগেই সরকারের এই সুযোগ ফিরিয়ে আনা উচিত ছিল।

যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জোট ইউনিভার্সিটি ইউকের প্রধান নির্বাহী অ্যালিস্টেয়ার জার্ভিস সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, নতুন নিয়মের ফলে যুক্তরাজ্য আবারও বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছে প্রথম পছন্দের গন্তব্যে পরিণত হতে সক্ষম হবে। তিনি বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে বিদেশি শিক্ষার্থীরা যুক্তরাজ্যের সামাজিক ও অর্থনৈতিক গতিধারায় নতুন জোয়ার আনেন এবং অর্থনীতিতে বছরে ২৬ বিলিয়ন পাউন্ডের অবদান রাখেন।

তবে অভিবাসন বিষয়ে নজরদারি করা সংগঠন ‘মাইগ্রেশন ওয়াচ’ এই নিয়ম শিথিলের বিষয়টিকে পশ্চাৎমুখী পদক্ষেপ হিসেবে মন্তব্য করেছে। সংগঠনটি বলছে, এর ফলে অদক্ষ কাজে লিপ্ত শিক্ষার্থীরাও যুক্তরাজ্যে থেকে যাওয়ার সুযোগ নেবেন।