চিরকুটে ভর্তি: উপাচার্য ও ডিনের কুশপুত্তলিকা দাহ

পরীক্ষা ছাড়াই ছাত্রলীগের ৩৪নেতাকে ভর্তির অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়র উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান ও ডিন শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলামের কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে একদল শিক্ষার্থী। বুধবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্তর্যের পাদদেশে এই কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্লাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতৃত্বে কুশপুত্তলিকা দাহ কর্মসূচিতে সংগঠনটির আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেন, ফারুক হাসান, বিন ইয়ামিন মোল্লা এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সালেহ উদ্দিন সিফাত সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সাধারণ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

কুশপুত্তলিকা দাহ প্রসঙ্গে বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘ডাকুস নির্বাচনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ডিন যে কাজ করেছেন তার পরিপ্রেক্ষিতে আজ দুপুরে আমরা তিনদফা দাবি জানিয়েছি। এই তিনদফা দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের বিভিন্ন ধারাবাহিক কার্যক্রম চলমান থাকবে। তারই অংশ হিসেবে ভিসি স্যার ও ডিন স্যারের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হবে। আমরা তাদের জানিয়ে দিতে চাই, আপনারা যে কাজ করেছেন এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আপনাদের নিন্দাভরে স্মরণ করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হৃদয়ে আপনাদের বিষয়ে কেবলই ঘৃণা, ঘৃণা এবং ঘৃণা রয়েছে। সেই ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ তারা আপনাদের কুশপুত্তলিকা দাহ করার মাধ্যমে করছে।’

ডাকসু নির্বাচনের সময় পরীক্ষা ছাড়া উপাচার্যের চিরকুট ও ডিনের সহায়তায় ছাত্রলীগ নেতাদের ভর্তি করিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে বুধবার দুপুরে একটি মানববন্ধন করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। মানববন্ধনে তারা তিনটি দাবি উত্থাপন করেন। এগুলো হলো- পরীক্ষা ছাড়া ভর্তি হওয়া ৩৪ জন ছাত্রলীগ নেতাকে অছাত্র ঘোষণা করা। পরীক্ষা ছাড়া ভর্তি হওয়া আট ডাকসু নেতার পদ শূন্য ঘোষণা দিয়ে উক্ত পদগুলোতে উপ নির্বাচন দেওয়া। পরীক্ষা ছাড়া উপাচার্যের চিরকুট ও ডিনের সহায়তায় ভর্তি হওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত বিশ্বিবদ্যালয় উপাচার্য ও অনুষদের ডিন শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলামের পদত্যাগ করা।

এসব দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করার ঘোষনা দেন এসব শিক্ষার্থী। এরই ধারাবাহিকতায় উপাচার্য ও ডিনের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়েছে বলে জানান তারা।

প্রসঙ্গত, গত রোববার (০৮ সেপ্টেম্বর) একটি জাতীয় দৈনিক প্রত্রিকার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বেরিয়ে আসে, গত ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে ছাত্রলীগের ৩৪ জন সাবেক ও বর্তমান নেতা ছাত্রত্ব টিকিয়ে রাখতে ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের মাস্টার্স অব ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামে ভর্তি হন। 

তফসিল ঘোষণার পর ছাত্রলীগ নেতারা উপাচার্যের সই করা চিরকুট ও অনুষদের ডিনের সহায়তায় নিয়ম বহির্ভূত উপায়ে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা ছাড়াই ভর্তি হন তারা।

এই পরিপ্রেক্ষিতে, ছাত্রলীগের ৩৪ জন নেতার ভর্তি প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি বলে গত মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেন অভিযুক্ত ডিন শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম