অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠি পাইনি: প্রাথমিক সচিব

উচ্চ আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে বেতন বৈষম্য দূর করতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় যে প্রস্তাব দিয়েছিল তা নাকচ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড উন্নীত করার সুযোগ নেই। এর ফলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য আপাতত দূর হচ্ছে না। তবে, এখনও অর্থমন্ত্রণালয়ের চিঠি হাতে পাননি বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন থেকে বেতন বৈষম্য দূর করার দাবি জানিয়ে আসছিল সরকারি প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষকরা। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বেতন বৈষম্য দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।

পড়ুন: অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসছে প্রাথমিক মন্ত্রণালয়

পরবর্তীতে দাবি আদায়ে প্রধান শিক্ষকরা হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন। ঢাকার সূত্রাপুরের গেন্ডারিয়া মহিলা সমিতি, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি রিয়াজ পারভেজসহ ৪৫ জন প্রধান শিক্ষক হাইকোর্টে ওই রিট দায়ের করেন। ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডসহ গেজেটেড পদমর্যাদা দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। রায়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণবিহীন উভয় প্রধান শিক্ষকদের প্রবেশ পদে বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডসহ গেজেটেড পদমর্যাদা ২০১৪ সালের ৯ মার্চ থেকে কার্যকর করতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।

আদালতের রায়ের আলোকে এবং শিক্ষকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ জুলাই বেতন বৈষম্য দূর করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয় ওই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড এবং সহকারী শিক্ষকদের ১২তম গ্রেডে উন্নীত করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয়।

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সাদিয়া শারমিন স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক পদের বেতন গ্রেড যথাযথ ও সঠিক থাকায় প্রধান শিক্ষক পদের বেতন ১০ম গ্রেড এবং সহকারী শিক্ষক পদের বেতন ১২ তে উন্নীত করার সুযোগ নেই।’

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এই আদেশ জারির বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতি প্রতিবাদ জানিয়েছে। সমিতির মুখপাত্র এস এম ছাইদ উল্লা বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয় আদালত অবমাননা করেছে। হাইকোর্টের রায়ের পরও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব নাকচ করা ঠিক হয়নি। আমরা আদালতের রায় হাতে পেলে অর্থ মন্ত্রণালয়ে আদালতের রায় পাঠিয়ে প্রতিবাদ জানাবো।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠি এখনও হাতে পাইনি।’

পড়ুন:অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসছে প্রাথমিক মন্ত্রণালয়

আরো পড়ুন: ১১তম গ্রেড: প্রতিমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির কী হবে?

উল্লেখ্য, প্রাথমিকের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককরা বর্তমানে ১১তম, প্রশিক্ষণবিহীন প্রধান শিক্ষককরা ১২তম, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা ১৪তম এবং প্রশিক্ষণবিহীন সহকারী শিক্ষকরা ১৫তম গ্রেডে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন।