মহাসমাবেশ সফল করতে ৩৫ প্রত্যাশীদের প্রস্তুতি শুরু

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করবে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ। সেই সমাবেশ সফল করার লক্ষে দেশের বিভিন্ন জেলায় মতবিনিময় সভা এবং সমাবেশ করছে সংগঠনটি। তারই অংশ হিসেবে আগামী মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) জামালপুরে প্রতিবাদ সমাবেশ করবে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ। বিষয়টি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদের মুখপাত্র ইমতিয়াজ হোসেন।

ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, ২৭ আগস্ট সকাল ১০ টায় জামালপুর সদরের দয়াময়ী মোড়ে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ এর দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। চলতি মাসে সারাদেশ ব্যাপী আমাদের কর্মসূচী চলবে। ২০ আগস্ট ময়মনসিংহে আমাদের মতবিনিময় সভা আছে। এছাড়া টাঙ্গাইল এবং যাত্রাবাড়ীতেও আমরা সভা করবো। আগামী ৭ আগস্ট ঢাকায় আমাদের যে মহাসমাবেশ এই সমাবেশ সফল করার লক্ষে আমাদের এই কর্মসূচী বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, গত শনিবার (১৭ আগস্ট) জামালপুরে আমরা যে মতবিনিময় সভা করি সেই সভায় সর্বসম্মতিক্রমে জামালপুরে প্রতিবাদ সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। জামালপুরের সমাবেশ সফল কারার পেছনে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ জামালপুর জেলা শাখার সভাপতি মো. জাহিদ হোসেন। ২৭ তারিখের সমাবেশে আরও থাকবেন প্রধান সমন্বয়ক এম এ আলী এবং আরেক প্রধান সমন্বয়ক হারুন-অর-রশিদ।

জামালপুরে কর্মসূচীর বিষয়ে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক এম এ আলী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ধারাবাহিকভাবে দেশের বিভিন্ন জেলায় আমাদের এই কর্মসূচী চলবে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য আগামী সেপ্টেম্বরের ঢাকায় আমাদের মহাসমাবেশ সফল করা। সেই লক্ষে বিভিন্ন জেলার নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা করার লক্ষে চলতি মাস জুড়েই আমাদের এই কর্মসূচী চলবে।

উল্লেখ্য, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে ২০১২ সাল থেকে আন্দোলন করে আসছেন চাকরিপ্রার্থীরা। তবে জাতীয় সংসদে কণ্ঠভোটে নাকচ হয়েছে ৩৫-এর সব চাওয়া-পাওয়া। তারপরও আন্দোলন থেকে সরে আসেননি আন্দোলনকারীরা। সাংগঠনিকভাবে কিছুটা গুছিয়ে উঠে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা। এ প্রক্রিয়ায় রয়েছেন আন্দোলনকারীদের সংগঠক ফেরদৌস জিন্নাহ লেলিন, সঞ্জয় দাসসহ আরও অনেকে।

জানা গেছে, সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলন সফলতার মুখ দেখলেও এখনো চলছে ‘৩৫ চাই’ আন্দোলন। চলতি বছরে এসেও কয়েক দফা কর্মসূচি পালন ও পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঘটেছে গ্রেফতারের ঘটনাও। এরইমধ্যে তাদের মধ্যে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব ও মতবিরোধ দেখা দেওয়ায় আন্দোলন কিছুটা ঝিমিয়ে পড়েছিলো।

তবে সেই দ্বন্দ্বের অবসান হয়েছে বলে জানিয়েছেন ৩৫ চাই আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। তবে সংসদে নাকচ হয়ে যাওয়ায় নতুন কর্মসূচিতে সরকারের বাঁধা আসতে পারে বলে আন্দোলনের নেতাকর্মীরা অনেকে মনে করছেন। তবে এতে তারা বিচলিত নন বলেও জানিয়েছেন।

গত ২৫ এপ্রিল চাকরি প্রত্যাশীদের বহুল কাঙ্ক্ষিত চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার প্রস্তাব জাতীয় সংসদে ওঠে। তবে তা নাকচ করে দিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, পড়াশোনা শেষ করার পর একজন ছাত্র অন্তত সাত বছর সময় পেয়েছে। এটা অনেক সময়। তাছাড়া এর আগে চাকরির বয়স ২৫ বছর ছিল, সেখান থেকে ২৭ ও পরবর্তীতে ৩০ বছর করা হয়। সে হিসেবে এখন বাড়ানোর যৌক্তিকতা নেই।

এ সময় তিনি প্রস্তাব উত্থাপনকারী সংসদ সদস্যকে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার আহবান জানান এবং প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। কিন্তু বগুড়া-৭ আসনের সংসদ সদস্য মো. রেজাউল করিম বাবলু সেটি প্রত্যাহারে রাজি না হলে কণ্ঠভোটের আয়োজন করা হয়। কণ্ঠভোটে প্রস্তাবটির বিপক্ষে ভোট দেন সংসদ সদস্যরা। মূলত প্রস্তাবটি পাস না হওয়াতেই তীব্র হতাশ হয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা।