ভাবগাম্ভীর্যের সাথে হাবিপ্রবিতে জাতীয় শোক দিবস পালিত

যথাযোগ্য মর্যাদা ও গুরুগাম্ভীর্য্যের সাথে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(হাবিপ্রবি)।

বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে নানা কর্মসূচির অংশ হিসেবে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে প্রশাসনিক ভবনের সম্মুখে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা। এরপর সকাল ৯ টা ১৫ মিনিটে কালো ব্যাচ ধারণ করে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মু. আবুল কাসেমের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের শোক র‌্যালি বের হয়ে ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক ও ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়ক প্রদক্ষিন করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে এসে শেষ হয়।

র‌্যালি শেষে স্থাপত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের সহাকারী পরিচালক মো.বেলাল হোসেন এর সঞ্চালনায় ক্রমান্বয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মু. আবুল কাসেম।

এরপর ক্রমান্বয়ে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষের পক্ষে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. ভবেন্দ্র কুমার বিশ্বাস,হিসাব শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড শাহাদাৎ হোসেন খান,সম্মিলিত ডীনগণ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষক পরিষদ,বঙ্গবন্ধু পরিষদ, প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম, প্রগতিশীল কর্মকর্তা পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হাবিপ্রবি শাখা, প্রগতিশীল কর্মচারী পরিষদ,মাস্টার রোল ও আউটসোর্স কর্মচারী পরিষদ, কর্মচারী ক্লাব, বঙ্গবন্ধু পেশাজীবী লীগ,হাবিপ্রবি স্কুলসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পেশাজীবি ও সামাজিক সংগঠন।

পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ নিহত সকল শহীদদের সম্মানে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাণী পাঠ ও বিতরণ করা হয়। উপাচার্যের বাণী পাঠ করেন প্রভাষক রুবাইদ আল ফেরদৌস।

উপাচার্যের পঠিত বাণীতে বলা হয়, আজ শোকাবহ আগস্ট, বঙ্গবন্ধু কে সপরিবারে পরিকল্পিত হত্যার কলঙ্কিত দিন। বাংলার আকাশ বাতাস, নিসর্গ প্রকৃতিও অশ্রুসিক্ত হওয়ার দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে স্বাধীনতা বিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে ঘাতকচক্রের হাতে নিজ বাসভবনে বাংলার অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শাহাদাৎ বরণ করেন । সেই সাথে শাহাদাৎ বরণ করেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা, বঙ্গবন্ধু পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেলসহ আরও অনেকে। এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড শুধু বাংলার ইতিহাসে নয়, পৃথিবীর ইতিহাসেও বিরল।

বাণীতে তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন এক অনন্যনেতা। সহজ সরল সাদামাটা অথচ দৃঢ়চেতা মনের একজন মানুষ । দেহ সৌষ্ঠব আর বজ্রকন্ঠের বিস্ময়কর শক্তির কারণে এ মানুষটিকে সহজেই আলাদাভাবে চেনা যেতো । মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর যুদ্ধ বিধবস্ত দেশকে পুনঃনির্মাণের জন্য কাজ করতেন তিনি। ক্ষুধা দারিদ্রমুক্ত দেশ গড়তে দিয়েছিলেন সবুজ বিপ্লবের ডাক। আর সেই সময়ই বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়।

ভাগ্যক্রমে বেচে গিয়েছিলেন তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিন। টানা ৪র্থবারের মতো সরকার গঠন করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তৈরির আকাঙ্খা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অত্যন্ত দক্ষতা আর বিচক্ষণের সাথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ইতোমধ্যে তার অনন্য নেতৃত্বের কারনে বিশ্ববাসীর কাছে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি অর্জনে সক্ষম হয়েছে আমাদের দেশ ।

বাণী পাঠ শেষে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.মু. আবুল কাসেম।

বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জাতির জনক ও তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।