যেনে নিন গরুর মাংস খাওয়ার স্বাস্থ্যকর উপায়

গরুর মাংসের বিভিন্ন স্থান ও কাটার পদ্ধতির ওপর চর্বি, আমিষ ও ক্যালরির মান অনেকটাই পরিবর্তিত হয়ে যায়। যেমন গরুর পেছনের পায়ের ওপরের অংশ ও পিঠের মাংসে আমিষ বেশি কিন্তু চর্বি কম। আবার কুঁজ, গলা ও সিনার মাংসে চর্বি বেশি। মাংস কাটার সময় আপনি স্বাস্থ্যকর অংশগুলো আলাদা করে নিতে পারেন।

লিন মিট খাওয়ার চেষ্টা করুন। প্রতি ৩ আউন্স মাংসে যদি চর্বির পরিমাণ ১০ গ্রামের কম, সম্পৃক্ত চর্বি ৪ দশমিক ৫ গ্রামের কম ও কোলেস্টেরল ৯৫ মিলিগ্রামের কম থাকে, তবে সেই মাংসকে লিন মিট বলে। পিঠ, দাবনা ও পেছনের পায়ের মাংসে লিন মিট আছে।

গরু-খাসির মাংস রান্নার আগেই মাংসের সঙ্গে লেগে থাকা সাদা চর্বির আস্তরণ ধারালো ছুরি বা বঁটি দিয়ে কেটে ফেলে দিন। যতটা সম্ভব ছোট টুকরা করে কাটুন। এতে ভেতরকার চর্বি সহজেই বের হয়ে আসে এবং পরে ফেলে দেওয়া যায়। ছোট টুকরাগুলো গরম পানি দিয়ে ধুয়ে পানি ফেলে দিলে আরও কিছুটা চর্বি চলে যাবে।

ঝোল বা ভুনাজাতীয় রান্না এড়িয়ে চলুন। চর্বি বা তেল ঝোলের সঙ্গে মিশে যায়, এটি অস্বাস্থ্যকর। বরং কিমা করে, গ্রিল বা শিক কাবাব, বারবিকিউ, স্টেক করে রান্না করে খেতে পারেন। তবে অতিরিক্ত গ্রিল বা ঝলসানো হলে ক্ষতিকর রাসায়নিক যৌগ তৈরি হয়। তাই মাঝারি তাপমাত্রায় রান্না করুন। আগে মেরিনেট করে নিলে রান্নার সময়টুকু কমানো যায়। আবার মাংসের ঝোল রান্না করলে ঠান্ডা হওয়ার পর ওপরে যে হলুদ চর্বির আস্তরণ পড়ে, তা চামচ দিয়ে তুলে ফেলে দিতে পারেন।

মাংস রান্নায় ঘি, তেল বেশি ব্যবহার না করে সিরকা বা টক দই দিয়ে মেরিনেট করে নিতে পারেন। অল্প তেল ব্রাশ করে, ওলিভ ওয়েল বা সূর্যমুখী তেল ব্যবহার করে রান্না স্বাস্থ্যকর।

মগজ, পায়া, নেহারি, হাড়ের মজ্জা ইত্যাদিতে চর্বির মাত্রা অনেক বেশি।

মাংসের নানা পদ রান্নায় সয়া সস, বিট লবণ, টেস্টিং সল্ট ব্যবহার করলে তা উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্‌রোগী বা কিডনি জটিলতার রোগীদের জন্য আরও ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। বরং রান্নায় সিরকা, টক দই, লেবুর রস, কাঁচা পেঁপে, বাটা গোলমরিচ ব্যবহার করতে পারেন।

কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে মাংসের সঙ্গে সবজি ও সালাদা খাবেন প্রচুর পরিমাণে।

লেখক: পুষ্টি বিশেষজ্ঞ, গ্রিন লাইফ হাসপাতাল