ঘামে ঝরা স্বপ্ন, পানিতে ফেললো পুলিশ!

গরিবের অটোরিকশা আর হকারদের উপর নির্যাতন বন্ধ করো। যদি এই মানুষগুলো বোঝা মনে হয় তবে ওদের নিঃশ্বাস কেড়ে নাও তবুও জীবিকায় লাথি মেরো না। এমনই একটি স্ট্যাটাস দিয়েছে সাইফ নামে এক ফেসবুকার। সাইফের মত অনেকেই এখন ফেসবুক দুনিয়ায় উপরের ছবি নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্যে ব্যস্ত।

সূত্র বলছে, ঘটনাটি চাঁদপুর নৌ-টার্মিনালের লঞ্চঘাটের। অবৈধভাবে আমড়া বিক্রির অপরাধ ছিল হকারটির বিরুদ্ধে। যার শাস্তি নিজ হাতে তাকে দিয়েই আমড়া নদীতে ফেলা। ঘটনাটি ঘটিয়েছে লঞ্চঘাটে দায়িত্বরত পুলিশ। যদিও তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে ঈদের একদিন আগে গরীর আমড়া বিক্রিতার এ বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস ভাইরাল হয়েছে। যাতে লেখা হয়েছে, ‘‘আমার বাংলাদেশ যেখানে অসহায় মানুষের স্বপ্ন এইভাবেই নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। আমড়া বিক্রেতার এই থালায় কী আছে জানেন?

থালায় শুধুমাত্র ছিলা-আছিলা আমড়া কিংবা লবন-মরিচ না; এখানে একথালা স্বপ্ন ছিলো। একটি পরিবারের একদিনের আহার ছিলো। ঈদের আগের রাতে হকার্স মার্কেট থেকে মেয়ের জন্যে লাল জামা আর ছেলের জন্যে কম দামের পাঞ্জাবি কেনার টাকা ছিলে। এই একথালা আমড়ায় হয়তো তার স্ত্রী অথবা মায়ের জন্যে ঔষদ কেনার টাকা ছিলো। পরের দিন আবার পালবাজার থেকে আমড়া কেনার মূল চালান ছিলো।

পরিশেষে এই একথালা আমড়ায় গরীর লোকটার কপাল বেয়ে ঝরেপড়া লোনাক্ত ঘাম ছিলো। হয়তো দু'চোখের জলও ছিলো।

চাঁদপুর নৌ-টার্মিনালের লঞ্চঘাটে অবৈধভাবে থালা মাথায় আমড়া বিক্রির অপরাধে তাকে বড়জোড় কানধরে উঠবস করতেন. না হয়, একঘন্টা আটক রাখতেন। তাই বলে তার জীবন-জীবিকার একমাত্র অবলম্বনটা জলে ফেলে দিবেন??

চাঁদপুর লঞ্চঘাটে কতোগুলো অবৈধ স্থাপনা, হোটেল আর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে? নিশ্চই জানেন আপনি। পরবেন? ঠিক এইভাবে সেগুলো নদীতে ফেলে দিতে?

হে রাষ্ট্র, এই গরীব মানুষগুলো আপনার কাছে যদি এএতোটাই বোঝা হয়ে থাকে, তবে তাদেরকে ধরে ধরে নদীতে ফেলে দিও। প্লিজ, তবুও তার স্বপ্নগুলো এইভাবে নদীতে ফেলো না।’’