বাড়ি যাওয়া হলো না ওদের, হাসপাতালেই ঈদ

একদিন পরই দেশবাসী উদযাপন করবে পবিত্র ঈদুল আযহা। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে ঈদের প্রস্তুতি পর্ব। ঢাকা শহর সহ বিভিন্ন স্থান থেকে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে ঈদমুখী মানুষরা। তবে এবারের ঈদে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কও রয়েছে অনেকের মধ্যে। এছাড়া যারা ইতোমধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তারা বঞ্চিত হচ্ছে ঈদের আনন্দ উৎসব থেকে।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের বেডে শুয়ে দিন পার করছেন ডেঙ্গু আক্রান্ত বেশ কিছু শিক্ষার্থী। মা-বাবা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি করা হবে না ঈদের আনন্দ-উৎসব। সহপাঠিরা সবাই যখন বাড়ি চলে যাওয়ার খবর শুনছেন অনেকের চোখে পানি চলে আসছে। প্রতিবারই বাড়িতে ঈদ উদযাপনে চলে যেতেন। কিন্তু এবার আর হচ্ছে না। এছাড়া রাস্তায় দীর্ঘ যানজট, গ্রামে ডেঙ্গু চিকিৎসার সু-ব্যবস্থার অভাব এবং নতুন করে সেখানে ডেঙ্গু ছড়ানোর সম্ভবনা প্রভৃতির কারণে ঢাকায় থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অসুস্থ শিক্ষার্থীরা।

আজ শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে দেখতে গেছেন ডেঙ্গু আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের। এসময় উপাচার্যের সঙ্গে ছিলেন চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রধান কর্মকর্তা ডা. মো. মুত্তাকী ও অন্যান্য কর্মকর্তারা।

উপাচার্য অসুস্থ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ডাবের পানি, ফল ও জুস বিতরণ করেন এবং তাদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। তাদের যেন কোনো অসুবিধা না হয়, সেজন্য চিকিৎসাকেন্দ্রের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ঈদের ছুটি বাতিল করে দেন।

ডেঙ্গুতে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে তারা চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে কয়েকজনের শারীরিক অবস্থা ভালো দিকে। আবার কয়েকজন ভর্তি হয়েছেন সবেমাত্র। যাদের অবস্থা একটু ভালোর দিকে তারা জানান, ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার শরীর বেশ দুর্বল হয়ে গেছে। আর এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছে। অপর দিকে ঢাকা শহর থেকে বাড়ি ফেরা মানুষদের রাস্তাঘাটে বেশ কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। দীর্ঘ যানজটে অসুস্থ হয়েও পড়ছেন অনেকে। এর মাঝে যদি তারা বাড়ি যায় তাহলে পথিমধ্যে আবার শরীরের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যেতে পারে। তাই বাড়ি ফেরার সাহস পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা।

এছাড়া অনেকে মনে করছেন, ঢাকাতে ডেঙ্গুর যেভাবে চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাচ্ছে, হয়তো গ্রামে গেলে তা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। আর অনেক গ্রামে ডেঙ্গুর চিকিৎসা সু-ব্যবস্থাও নেই। তাই ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি যাওয়া উচিত মনে করছেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী জানান, আমি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে পরিবারের সবার চিন্তার কারণ হয়েছি। এরপর ডেঙ্গু নিয়ে বাড়ি ফিরলে সেখানে অন্যদেরও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আমি এখানে থাকাটা ভালো মনে করছি। যদিও ঈদে বাড়ি ফিরতে না পারাটা কষ্টের। তারপরও ভাগ্যকে মেনে নিতে হচ্ছে।