ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটিতে ডেঙ্গু প্রতিরোধ বিষয়ক সেমিনার

সাউদার্ন মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. হাসানুজ্জামান ভূঁইয়াকে শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সিকান্দার খান

এবারের বর্ষায় ডেঙ্গু জ্বর মহামারির আকার ধারন করেছে। প্রায় প্রতিদিনই নতুন রোগী আক্রান্ত ও মৃত্যুবরণ করছে। তাই শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিতে ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটিতে (ইডিইউ) এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনার হলে সোশ্যাল সার্ভিস ক্লাব ‘ডিফেন্স এগেইনস্ট ডেঙ্গু’ শীর্ষক এ কর্মশালার আয়োজন করে। সাউদার্ন মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. হাসানুজ্জামান ভূঁইয়া ডেঙ্গুর লক্ষণ, এর প্রতিরোধ ও প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করেন।

তিনি বলেন, ধরন পাল্টে যাওয়ার ফলে ডেঙ্গু জ্বরের স্বাভাবিক যেসব লক্ষণ থাকে, সেগুলো এ বছর অনেক রোগীর মাঝেই পাওয়া যাচ্ছে না। সাধারণত ডেঙ্গু জ্বর হলে রোগীর প্রচণ্ড জ্বর, শরীরে ব্যথা হয়ে থাকে ও গায়ে র‌্যাশ ওঠে। কিন্তু বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরের ধরন ও এ সকল লক্ষণ বদলে গেছে। এ বছর যারা মারা গেছেন তারা সামান্য জ্বর মনে করে অবহেলা করেছেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শও হয়তোবা নেননি।

রোগীদের প্রতি পরামর্শ হিসেবে তিনি বলেন, জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল এবং তরল জাতীয় খাদ্য যেমন পানি, শরবত ইত্যাদি বেশি খেতে হবে। প্রচণ্ড ব্যথা হলেও অন্য কোনো ব্যথার ওষুধ দোকান থেকে কিনে খাওয়া যাবে না। গর্ভবতী, ডায়াবেটিস, হৃদরাগ, লিভার ও কিডনির রোগে আক্রান্ত যারা, তাদের অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। প্লাটিলেট পুনরুদ্ধারে পেপে পাতার রস খাওয়ার গুজবে কান না দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, ডেঙ্গুর কোনো ভ্যাকসিন নেই। যেহেতু ডেঙ্গু ভাইরাস চার টাইপের, তাই এই চারটি ভাইরাসের প্রতিরোধে কাজ করে, এমন ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হয়নি। তাই ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধের মূলমন্ত্রই হলো- অ্যাডিস মশার বিস্তার রোধ এবং এই মশা যেন কামড়াতে না পারে, তার ব্যবস্থা করা।

ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সিকান্দার খান বলেন, সচেতনতা ও প্রতিরোধের মাধ্যমেই ডেঙ্গুর হাত থেকে মুক্তি সম্ভব। শিক্ষার্থীসহ সেমিনারে উপস্থিত সকলেই নিজে এবং পরিবার ও বন্ধু-স্বজনদের মধ্যে এ সচেতনতা ছড়িয়ে দিন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদ আল নোমান বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়েছে। ইডিইউ পরিবারের সকলের সুস্থতা নিশ্চিত করতে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিয়েছি আমরা। ক্যাম্পাস জুড়ে নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও কীটনাশক প্রয়োগ করছি। কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পৃষ্ঠপোষকতায় সচেতনতা তৈরিতে ইডিইউ সোশ্যাল সার্ভিস ক্লাব এ সেমিনারের আয়োজন করেছে। কেননা, নিজেরা সচেতন না হলে এ প্রকোপ থেকে মুক্ত থাকা দুরূহ।

সোশ্যাল সার্ভিস ক্লাবের উপদেষ্টা সহকারী অধ্যাপক ফাহমিদা আক্তারের সঞ্চালনায় এতে আরো উপস্থিত ছিলেন ইডিইউর মহাপরিচালক সৈয়দ শফিকউদ্দীন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সামস উদ-দোহা, রেজিস্ট্রার সজল কান্তি বড়ুয়া প্রমুখ।

সেমিনারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ক্লাবের কনভেনার প্রশান্ত ভৌমিক ও সমন্বয়ক দিপ্ত বিশ্বাস।